সারা বাংলায় উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই নির্বাচনে লড়াই করে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্য সরকারের উন্নয়নে সামিল হতেই বিরোধী দল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেয়। এমনটা প্রচার রয়েছে। এবার চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনের মধ্যে শান্তিপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী স্থানীয় মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কথা, অনুন্নয়নের কথা তুলে ধরলেন। শান্তিপুরের হাটখোলা পাড়ার লক্ষ্মীকান্ত মৈত্র রোডে তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামীর ঘরে বসেই কথা হচ্ছিল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ৩২ বছরের ব্রজকিশোরবাবু শ্রী শ্রী বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী বাটীতে বসে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বললেন, 'এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘব করা, মানুষের দুঃখ দূর করতে তিনি ব্রতী হবেন।' তিনি জানিয়ে দিলেন, তিনি কনফিডেন্ট কিন্তু ওভার-কনফিডেন্ট নন, তবে ফোটোফিনিস হলেও তিনিই জয় পাবেন।
Advertisment
বাংলাদেশের কুমিল্লা তো এখানে ভোট প্রচারে জায়গা করে নিয়েছে।
'বাংলাদেশের প্রচার শান্তিপুরের মানুষ নেবেন না। আমরা কাউন্টার বলছি, বাংলাদেশের ঘটনার জবাব দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আসলে বিজেপি ঘোলাজলে মাছ ধরতে চাইছে। তাতে কোনও লাভ কিছু হবে না।'
Advertisment
জয়ের বিষয়ে কতটা আশাবাদী?
'কনফিডেন্ট ভাল ওভার কনফিডেন্ট নয়। আমরা জিতে গিয়েছি একথা বলব না। জিতব। তবে ফোটোফিনিসও হতে পারে। গতবার আমরা গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলাম। ৬টা অঞ্চলের মধ্যে ৫টায় হেরে ছিলাম। তবে এবার সেখানে আমরা ভাল ভোট পাব। নির্দ্বিধায় শহরেও এগিয়ে থাকব।'
'ডোর টু ডোর প্রচারে বেশি জোর দিয়েছি। মানুষের দুঃখ মেটানো দরকার। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বলেছি। ছোট-বড় সভা যেমন হচ্ছে। তেমনই একই সঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে গিয়েছি। মানুষের সমস্যা নিয়ে কথা বলেছি।'
এখানে সমস্যা কি আছে? কি কি উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে?
'শহরের কলোনিগুলোতে আরও উন্নয়নের প্রয়োজন। জমা জলের সমস্যা আছে। স্কুলগুলোর উন্নতি করতে হবে। স্টেট জেনারেল হাসপাতাল আছে। সেখানে ঘর আছে, ডাক্তার নেই। তাঁত শিল্পীদের সমস্যা আছে। হাট থাকলেও সবাই বসতে পারে না অর্থের অভাবে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করাতে হবে। তার ফলে লাভবান হবেন তাঁতিরা। বেশ কিছু সমস্যা তো আছে। মানিকনগর ও চড়পান পাড়ায় ৫টি বুথ আছে। সেখানে মানুষেরা নানাবিধ সমস্যায় রয়েছেন। চড়পান পাড়া পুরো আন্দামানের মতো একটা দ্বীপ। নৌকায় যাতায়াত করতে হয়।'
অকাল ভোট…
'সপ্তমীর দিন থেকে পুজোর আনন্দ না করে দেওয়াল লিখতে হয়েছে দলের কর্মীদের। বিজেপির কারণেই এই শাস্তি পেতে হয়েছে। মানুষের রায় নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে বিজেপি। তার ফলও মিলবে ভোটবাক্সে।'
রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন কখনও?
'আমি সরাসরি রাজনীতিতে না থাকলেও ২০১৬ থেকে পরোক্ষ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমার পেশা হার্টিকালচার। ফেসবুক বা সোশাল মিডিয়ায় দেখতে না পাওয়া গেলেও মানুষের পাশে থেকে কাজ করি।'
আপনাদের পরিবার তো শহরে বেশ পরিচিত।
'৫৫০ বছর ধরে এই শহরে আমাদের পরিবারের বাস। অদ্বৈতাচার্য প্রভুর দশম পুরুষ ছিলেম বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী। আমরা প্রভুর পঞ্চদশ পুরুষ। বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর দাদা ছিলেন ব্রজগোপাল গোস্বামী। আমরা ব্রজগোপাল গোস্বামীর পঞ্চম পুরুষ। বাড়িতে রাস উৎসব হয়। স্বভাবতই শান্তিপুরের বাসিন্দাদের সঙ্গে একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে।'
সিপিএম বলছে ভাল ফল করবে।
'সিপিএমের কোনও সংগঠনই নেই। ওরা এখন অস্তিত্ব সংকটে।'