বিজেপির রথের চাকা গড়াতে দেয়নি রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞায় থমকে রয়েছে বিজেপির রথ। যার জেরে গত শুক্রবার কোচবিহারে গেরুয়াবাহিনীর সাধের রথযাত্রা কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু সেদিন উত্তরবঙ্গের ওই জেলায় রথযাত্রা উপলক্ষে বহু কর্মী-সমর্থক এসেছিলেন। আর তাঁদের কথা ভেবেই সেদিনের সভাস্থলে বক্তৃতা দিতে উঠেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এর জেরেই এবার বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করল পুলিশ। শুক্রবার কোচবিহারে সভা করার অভিযোগে দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, রাহুল সিনহা, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে শনিবার মামলা দায়ের করল পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে দ্য সানডে এক্সপ্রেসকে এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ‘‘মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইন অনুযায়ীই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩(বেআইনি জমায়েত), ১৮৮(সরকারি নির্দেশিকা অমান্য) , ১৮৯(সরকারি কর্মচারীর প্রতি ক্ষতিসাধনের হুমকি), ৫০৬( অপরাধজনক ভীতিপ্রদর্শন) ও পুলিশ অ্যাক্টের ৩২নং ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন, বীরভূম বিজেপির ঘরে কাজিয়া, পদ ছাড়লেন ৫৭ জন কর্মী
মামলা দায়ের প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘সভার কর্মসূচি আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। যেহেতু অনেক মানুষ সভাস্থলে এসে গিয়েছিলেন, তাই তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাতে মঞ্চে উঠে বলি যে আমরা সভা করব না। এমনকি, যাঁদের নামে মামলা করা হয়েছে, তাঁদের অনেকেই মঞ্চে ছিলেন না সেদিন। এটা ইচ্ছাকৃত ভাবে করা হয়েছে। ওরা(পুলিশ) যদি এ ধরনের পদক্ষেপ করতে থাকে, তাহলে এটা বুঝতে হবে যে, এখানে কীভাবে ওরা(পুলিশ) কাজ করে।’’
প্রশাসনের এহেন পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা অরূপ রায় বলেছেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। যদি কোচবিহারে মিছিল ও সভা করায় হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেয়, তাহলে এটা সাধারণ বুদ্ধিতে বলে যে, সেখানে কোনও সভা করা যাবে না।’’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কোচবিহার থেকে বিজেপির প্রথম রথযাত্রা কর্মসূচির সূচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষবেলায় তা বাতিল করে দেয় হাইকোর্ট। রথযাত্রা করলে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হতে পারে বলে এর বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার।
অন্যদিকে,পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ৮ জন বিজেপি সমর্থককে শুক্রবার গ্রেফতার করেছে জলপাইগুড়ি পুলিশ। সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ১৬ জন পুলিশকর্মী জখম হন।
এদিকে, রথযাত্রা নিয়ে আলোচনায় বসার জন্য শনিবার রাজ্য সরকারকে চিঠি দেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি রাজ্য উপ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ও মুকুল রায়। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে এ প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোনও সময়ে আলোচনায় বসতে রাজি বিজেপি।’’ রাজ্যে কোনও গণতন্ত্র নেই বলে মন্তব্য করেছেন মুকুল রায়।
Read the full story in English