‘শত্রু বিনাশ করতে কোমরে তলোয়ার লুকিয়ে রাখুন’, দিলীপ ঘোষের পর তলোয়ার উপহার পেয়ে এমন ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি দিয়ে এবার বিতর্কে জড়ালেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া টেলি ও টলি পাড়ার পরিচিত মুখ কাঞ্চনা মৈত্র। বরানগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর অনুষ্ঠানে গিয়ে তলোয়ার উপহার পেয়ে নাম না করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এমন হুঙ্কার ছাড়লেন কাঞ্চনা। নবাগতা বিজেপি নেত্রী যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তখন তাঁর পাশেই বসে রয়েছেন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ও মানস ভট্টাচার্য। তাঁদের হাতেও এদিন তলোয়ার উপহার তুলে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, ক’দিন আগে পানিহাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে তলোয়ার উপহার পেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। যা ঘিরে চরম বিতর্ক বাধে বঙ্গ রাজনীতিতে। সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও বিজেপি নেতাদের হাতে যেভাবে তলোয়ার উপহার দেওয়া হল এবং যে ভাষায় পরোক্ষে তৃণমূলকে নিশানা করলেন কাঞ্চনা, তা এই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতার বাড়িতে শোভন-বৈশাখী, সঙ্গী বিজেপি নেতা
ঠিক কী বলেছেন কাঞ্চনা মৈত্র?
তরোয়াল বিতর্ক প্রসঙ্গে কাঞ্চনা বলেন, ‘‘যে মূর্খের দল বলে, তলোয়ার মানে অশান্তি, সন্ত্রাস। সেই মূর্খের দলকে বলব, আবার ক্লাস সেভেন-এইটের ইতিহাস বইটা ধরে দেখুন, আমাদের দেশের বীররা তলোয়ার হাতে দেশের শত্রুদের কীভাবে বিনাশ করেছেন। আপনাদের কাছে একটাই আবেদন, মনে জোর রাখবেন, আর কোমরে একটা লুকোনো তলোয়ার রাখবেন। যে তলোয়ার দিয়ে আপনাদের সম্মুখে শত্রুদের, যারা আমাদের দেশে, রাজ্যে, এলাকায় বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তাদের সমূলে বিনাশ করবেন। কারণ, আপনারা প্রত্যেকে ছত্রপতি শিবাজী আর মহিলারা প্রত্যেকে ঝাঁসির রানি’’।
আরও পড়ুন: কুকুরের মাংস খান, শ্লেষ দিলীপ ঘোষের
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা বিধানসভায় পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় বলেন, ‘‘মনুষ্য সমাজে অস্ত্রের আস্ফালন হওয়ার তো কথা নয়। যাঁরা অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি করছেন, তাঁরা অস্ত্রের আস্ফালন দেখিয়ে ভারতীয় সভ্যতার ঐতিহ্য, পরম্পরা বন্ধ করতে পারবেন না’’।
উল্লেখ্য, এর আগেও অস্ত্র বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপি নেতারা। রামনবমীর শোভাযাত্রায় খড়গপুরে গদা, তলোয়ার হাতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। লোকসভা নির্বাচনের আবহে দিলীপ ঘোষের এই অস্ত্র মিছিলকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে ভোট চান না, কে বারণ করেছে! ধর্মের পতাকা লাগলে হবে না, ধর্ম বেচে খাবেন না, ধর্মকে আমরা সম্মান করি। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার প্রয়োজন পড়ে না আমাদের। নির্বাচনী বিধি লাগু রয়েছে, এর মধ্যে রামনবমীর মিছিল করছে। শুনলাম, তোমরা কেউ গদা নিয়ে, কেউ তলোয়ার নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছো ভোট চাইতে। রাজনীতির সঙ্গে কী সম্পর্ক! গদা নিয়ে কার মাথা ফাটাবেন? কার গলা কাটবেন, তলোয়ার দিয়ে? বাংলায় এসব করে ভোট হয় না’’।