বেশ কয়েকটি উপনির্বাচন ও বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ফলাফল ও হালহকিকত নিয়ে মুখ খুললেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের পাতায় উঠে এল সেই সব প্রসঙ্গ।
বিভিন্ন রাজ্যে উপনির্বাচন এবং বিহার নির্বাচনে কংগ্রেস ক্রমশই পিছিয়ে পড়ছে। এই ফলাফলগুলি সম্পর্কে আপনার কী মত?
দেশের জনগণ, শুধু বিহারে নয়, যেখানেই উপনির্বাচন হয়েছিল, স্পষ্টতই কংগ্রেসকে কেউই বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করছে না। এটা একটা উপলব্ধি। বিহারের ক্ষেত্রে বিকল্প কখনই কংগ্রেস ছিল না, ছিল আরজেডি। আমরা গুজরাটের সমস্ত উপনির্বাচনে হেরেছি। এমনকি লোকসভা নির্বাচনে আমরা সেখানে একটিও আসন জিততে পারি নি। উত্তর প্রদেশের কয়েকটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থীরা উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে তার ২% এরও কম ভোট পেয়েছে। আমার এক সহকর্মী, যিনি সিডাব্লুসি’র অংশ, তিনি অন্যদিন একটি বিবৃতিতে বলেছিলেন যে, তিনি আশা করবেন যে এবার কংগ্রেসের উচিত নিজের দিকে তাকানো, নিজেকে সঠিকভাবে দেখা। গত ছ'বছর ধরে এই কাজটি করা হয়নি। আর কবে হবে? আমরা জানি কংগ্রেসে কী ভুল হচ্ছে সাংগঠনিকভাবে। আমাদের কাছে তার উত্তরও রয়েছে। এমন কংগ্রেস নিজেও সেই উত্তর জানে। তবে তাঁরা তা স্বীকার করতে রাজি নয়। যতদিন না বুঝতে পারবে ততদিনে গ্রাফের অবনতি হবেই। এখন কংগ্রেসের তা পরিস্থিতি তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
কংগ্রেস নেতৃত্ব যদি উত্তরগুলি জানেন তবে কেন আপনি মনে করেন যে সমস্যাগুলি সমাধান করতে অনীহা রয়েছে দলের?
অনীহার কারণ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি (সিডাব্লুসি) মনোনীত প্রার্থীদের নিয়ে তৈরি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলি অবশ্যই সিডব্লিউসি সংবিধানেও গ্রহণ করতে হবে। অথচ পর পর নির্বাচনে কংগ্রেসের ক্রমাগত পতনের কারণ সম্পর্কে মনোনীত সদস্যরা প্রশ্ন শুরু করবেন এবং তাঁদের চিন্তা ও উদ্বেগ প্রকাশ করবেন এটা মেনে নেওয়া হবে না?
আপনি এবং অন্য ২২ জন প্রবীণ নেতা কংগ্রেস সভাপতিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। নেতৃত্ব থেকে কিছু বলা হয়নি আপনাদের?
কোনও কথা হয়নি। নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কোনও আলোচনার জন্য প্রচেষ্টা করা হয়েছে বলেও মনে হয় না। যেহেতু আমার মতামত প্রকাশের জন্য কোনও ফোরাম নেই, তাই আমি প্রকাশ্যে এগুলি প্রকাশ করতে বাধ্য নই। আমি একজন কংগ্রেস সদস্য এবং কংগ্রেস সদস্য হয়ে থাকব। প্রার্থনা করব জাতির হয়ে দাঁড়াবে এমন বিকল্প শক্তির সন্ধান করুক কংগ্রেস।
কোনও বিকল্প না থাকা কিছু দলের জন্যও অত্যন্ত খারাপ!
এটা ভয়ানক। সেটা দীর্ঘদিন ধরে। বিহারে, উত্তরপ্রদেশে দীর্ঘসময় ধরে আমরা নিজেদেরকে বিকল্প দল হিসেবে রাখতে পারছি না। এমনকি গুজরাটেও। এগুলি বড় রাজ্য। আমরা লোকসভার সমস্ত আসন হারিয়েছি এবং বর্তমান উপনির্বাচনে আমরা কিছুই করে দেখাতে পারিনি। সুতরাং যেখানে আমরা বিকল্প ছিলাম সেই রাজ্যবাসীr প্রত্যাশা মতো কংগ্রেস তাদের আস্থা ফিরিয়ে দেয়নি। তাই আত্মতন্ত্রের সময় শেষ। কংগ্রেসকে সাহসী হয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচন গণতান্ত্রিকভাবে হলে জবাব কি সেখানেই দেবেন?
আমাদের কংগ্রেসীদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে আমরা সংখ্যায় কমছি। প্রতিটি নির্বাচন এখন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সমানভাবে হচ্ছে। এই সময় কংগ্রেসের নিজেকে আবিষ্কার করার সময়। উত্তর খুঁজতে হবে, ত্রুটি চিনতে হবে, তা না হলে নির্বাচনের ফলাফলে বদল আসবে না। আমাদের কথা শোনার বদলে আমাদের দিক থেকেই মুখ ফেরানো হল। আর এখন ফলাফল দেখে যা বোঝার সবাই বুঝতেই পারছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন