দলকে শক্তিশালী করার জন্যই তিনি কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। রবিবার একথা দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে স্পষ্ট করে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জ্জুন খাড়গে। কংগ্রেস হাইকমান্ড সমর্থিত এই প্রার্থীর বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাংসদ শশী থারুর। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন খাড়গে। কিন্তু, এক ব্যক্তি দুই পদ বর্তমানে দলে গ্রাহ্য নয়। সেই জন্য তাঁকে সেই পদ ছাড়তে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর দলীয় সভাপতি পদে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে মুখ খুলেছেন খাড়গে।
তিনি জানিয়েছেন, দলের নবীন ও প্রবীণ নেতারা তাঁকে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। সেই অনুরোধেই তিনি সভাপতি নির্বাচনের প্রার্থী হতে রাজি হয়েছেন। রবিবার রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার পদ ছাড়া নিয়েও খাড়গে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, 'দলের বর্তমান নীতিই হল, এক ব্যক্তি এক পদ। সেই পদের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই আমি রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।'
দীপেন্দর হুডা, সৈয়দ নাসির হুসেন ও গৌরব বল্লভদের পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে খাড়গে বলেন, 'দেশে বেকারত্ব বাড়ছে। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে। বিজেপির সমস্ত প্রতিশ্রুতি অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেসের এক বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।' এই সাংবাদিক বৈঠকে বল্লভ জানান, তিনি হুডা ও হুসেনের সঙ্গে কংগ্রেসের মুখপাত্র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। কারণ, তাঁরা খাড়গের পক্ষে এআইসিসির সভাপতি নির্বাচনে প্রচার চালাতে চান।
নির্বাচনী প্রচারে ইতিমধ্যেই খাড়গের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন শশী থারুর। তিনি বলেছেন যে বর্তমান সময় পরিবর্তনের জমানা। সেই জমানার প্রতিনিধি হিসেবেই তিনি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু, তাঁর বিপক্ষে যিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, সেই খাড়গে ধারাবাহিকতা এবং স্থিতাবস্থার প্রতিনিধি। এই প্রসঙ্গে খাড়গে জানান, তিনিও পরিবর্তন চান। এই জন্য ভোটে জয়ী হওয়ার পর যৌথভাবে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিতে চান। সেই সিদ্ধান্ত ব্যক্তিবিশেষের নয়, যৌথ সিদ্ধান্ত হোক, এটাই তাঁর মতামত।
আরও পড়ুন- কী কারণে ইন্দোনেশিয়া ফুটবলে এতবড় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল, ১৭৪ জন প্রাণ হারালেন?
কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনে তাঁকে গান্ধী পরিবার সমর্থন করছে, এই প্রসঙ্গে খাড়গে জানান যে শুধু গান্ধী পরিবারই না। কংগ্রেসের অন্যান্য নেতারাও তাঁকে দলের সভাপতি পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য অনুরোধ করেছেন। সেই সব আবেদনে সাড়া দিয়েই তিনি দলের সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে রাজি হয়েছেন। শনিবার ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মন্ত্রী কেএন ত্রিপাঠি দলের সভাপতি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র পেশ করতে এসেছিলেন। কিন্তু, তাঁর সেই মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। এর ফলে, কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন কেবল খাড়গে ও থারুরের মধ্যে।
কংগ্রেসের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথা ছিল ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তারিখ ছিল ১ অক্টোবর এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ৮ অক্টোবর। ওই দিন বিকেল ৫টায় চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৭ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গণনা হবে ১৯ অক্টোবর। ওই দিনই ঘোষণা করা হবে ফলাফলের। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির (পিসিসি) ৯ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি এই নির্বাচনে ভোট দেবেন।
Read full story in English