পেট্রোল-ডিজেলের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মোদী। তার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পাল্টা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সাফ বললেন যে, 'প্রধানমন্ত্রী এদিন একতরফা বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীদের বলতে দেওয়া হয়নি। আমার অনুরোধ ছিল করোনার বৈঠকে এইসব নিয়ে আলোচনা করবেন না। কিন্তু এটা ওদের এজেন্ডা। আমাদের বলতে দেওয়া হয়নি।' পাশাপাশি তাঁর প্রশ্ন, 'পেট্রোপণ্যে রাজ্যের থেকে ২৫ শতাংশ বেশি কর নেয় কেন্দ্র সরকার। সব মিলিয়ে ৭৫ শতাংশ কর কেন্দ্র নেয়। তাহলে রাজ্য সরকার কীভাবে চলবে?'
বাংলা সহ বিরোধী দল শাসিত রাজ্যগুলিকে পেট্রোপণ্যের দাম কমাতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এইসব রাজ্য সরকার মানুষের উপর 'অবিচার' করছে বলেও দাবি করেছেন নমো। যার বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া ৯৭ হাজার কোটি টাকা। উনি আমাকে ৫০ হাজার কোটি টাকা দিন। পরের দিন পেট্রোপণ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড় দিয়ে দেব। আপনার রাজ্য ৫ হাজার দিয়েছে, আমি ১০ হাজার কোটি দেব।' বাংলার বিরুদ্ধে মোদী সরকারের বৈমাতৃসূলভ আচরণেরও অভিযোগও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মোদী সরকারের পেট্রোপণ্যে কর চাপানোকে 'গণতন্ত্রে তোলাবাজি' বলে কটাক্ষ করেছেন। নভেম্বরে পেট্রোল, ডিজেলের উপর থেকে ভ্যাট ছাড় দিয়েছে কেন্দ্র, এমনটাই দাবি প্রধানমন্ত্রীর। মমতার প্রশ্ন, 'কী এমন দাম কমিয়েছেন নভেম্বরে? সবটাই তো লোক দেখানো, কত সেস বসিয়েছেন? কৃষি সেস, রোড সেস, শিল্প সেস, সাজুগুজু সেস? সেই টাকা তো রাজ্য সরকার পায় না। আপনি সব টাকা তুলে নিয়ে চলে যাবেন, আমাদের টাকাও দেবেন না, আর ভোট এলেই আমাদের নামে দোষ দেবেন।'
বুধবার বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে কোভিড বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই আচমকা পেট্রোল, ডিজেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সরব হন মোদী। কেন সরকারি একটি বৈঠকে প্রসঙ্গান্তর ঘটল? মুখ্যমন্ত্রীর মনে করেন রাজনৈতিক কারণেই প্রধানমন্ত্রী এই পদক্ষেপ করেছেন। মমতার কথায়, '৩ বছর ধরে পেট্রল-ডিজেলে ১ টাকা করে ছাড় দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের দেড় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ২০১৪ সালে বিজেপি কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় আসার পর পেট্রল-ডিজেলে ১৭ লক্ষ ৩১ হাজার ২৪২ কোটি টাকা কর পেয়েছে। এর থেকে আমরা কিছু পাইনি। আজ আপনি রাজ্যের উপর দায় চাপাচ্ছেন?'
তৃণমূলের তরফেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে, কেন্দ্র বাংলার বকেয়া সব পাওয়া মিটিয়ে দিলেই আগামী পাঁচ বছর প্রেট্রোপণ্যের উপর থেকে সব কর প্রত্যাহার করে নেবে রাজ্য সরকার।