Advertisment

সংসদের বিশেষ অধিবেশনের ডাক,লোকসভা নির্বাচনের 'এজেন্ডা' নির্ধারণে কী কৌশল 'ইন্ডিয়া' জোটের?

মুম্বইতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার আলোচনায় উঠে আসন সমঝোতার বিষয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
special parliament session, parliament session modi govt, opposition INDIA, oppostion india name, opposition alliance india, opposition rahul gandhi, Parliament, Pralhad Joshi, G20 Summit, indian express, political pulse

মুম্বইতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার আলোচনায় উঠে আসন সমঝোতার বিষয়

সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর এই বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়া সাইট 'এক্স' (টুইটার) তে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার কারণ কী বা এই অধিবেশনের আলোচ্যসূচি কী হবে, সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত এবিষয়ে কোন তথ্য দেওয়া হয়নি। তাই এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এর মধ্যেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের অধীনে 'ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন' নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করেছে কেন্দ্র।

Advertisment

'এক দেশ এক নির্বাচন'-এর পথে দ্রুত এগোতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার কমিটি গঠনের ঘোষণা করেছে। এই কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। আজই এই কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত আরও একবার জল্পনাকে উসকে দিয়েছে যে এবারের লোকসভা নির্বাচন নির্ধারিত সময়ের আগেই অনুষ্ঠিত হতে পারে। ।সূত্রের খবর, ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন, ইউনিফর্ম সিভিল কোড এবং মহিলা সংরক্ষণের বিল আনতে পারে সরকার আসন্ন সংসদের বিশেষ অধিবেশনে।

সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হয়েছে ১১ আগস্ট। অর্থাৎ বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার প্রায় এক মাস পর শুরু হবে বিশেষ অধিবেশন। সাধারণত, দেশে সংসদের মাত্র তিনটি অধিবেশন হয়- বাজেট অধিবেশন, বাদল অধিবেশন এবং শীতকালীন অধিবেশন। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকারও বিধান রয়েছে।

সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী 'এক্স'-এ তার পোস্টে বলেছেন, "সংসদের বিশেষ অধিবেশন ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ।" এই বিশেষ অধিবেশনে ৫টি বৈঠক হবে। তিনি তার পোস্টের সঙ্গেই পুরানো সংসদ ভবনের পাশাপাশি নতুন ভবনের একটি ছবি শেয়ার করেছেন। সংসদের বিশেষ অধিবেশনের আগে ৯ এবং ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে G-20 দেশগুলির একটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।

যদিও সরকার এই হঠাৎ ডাকা সংসদের বিশেষ অধিবেশনের এজেন্ডা পরিষ্কার করেনি, তবে জল্পনা চলছে যে আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে মোদী সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল আনতে পারে। এছাড়াও বিশেষ অধিবেশনে চন্দ্রযান-৩ মিশনের সাফল্য নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায়, আসন্ন এই বিশেষ অধিবেশনে অভিন্ন দেওয়ানী বিধি সম্পর্কিত একটি বিল উত্থাপন করার বিষয়েও জল্পনা চলছে জোর।

অনেক বিরোধী নেতা মনে করছেন যে মোদী সরকার আগামী লোকসভা নির্বাচন নিয়ে চলতি বছরেই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। তাই কিছু বিরোধী নেতা মনে করেন যে বিজেপি তার 'এক দেশ, এক নির্বাচন' ধারণার অধীনে লোকসভা নির্বাচন তাড়াতাড়ি করার কথা ভাবতে পারে। স্বাভাবিক সময়সূচী অনুসারে, দেশের পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশন ডাকার আকস্মিক সিদ্ধান্তের পরে প্রধান বিরোধী কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে ব্যবসায়ী আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নতুন প্রকাশ এবং মুম্বইতে বিরোধী জোট 'ইন্ডিয়া'র বৈঠকের কারণে বিশেষ অধিবেশন ঘোষণা করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ আরও বলেছেন যে এই বিশেষ অধিবেশন চলাকালীনও আদানি গোষ্ঠীর জেপিসি তদন্তের দাবি সংসদের ভিতরে এবং বাইরে অব্যাহত থাকবে।

এদিকে মুম্বইতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার আলোচনায় উঠে আসন সমঝোতার বিষয়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএকে কীভাবে কোণঠাসা করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই বৈঠকে।

কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খড়গে এবং তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৃঢ়ভাবে অনুরোধ জানিয়েছে যাতে আসন সমঝোতা নিয়ে অযথা সময় নষ্ট না করা হয়। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বৈঠকে জানিয়েছেন, ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের (এনডিএ) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি আসন "ত্যাগ" করতেও প্রস্তুত।

অন্যদিকে খাড়গে জাতীয় স্তরে এবং রাজ্য স্তরে সমন্বয় কমিটি গঠনের জন্যও এক প্রস্তাব পেশ করেন। জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির প্রধান শরদ পাওয়ার বিরোধী জোটের সকল নেতাদের মধ্যে সমন্বয় কমিটির দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা লালু প্রসাদ যাদব বলেছেন যে "বিভাজনমূলক রাজনীতি" দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং জাতির স্বার্থে তাদের "অহংকার" একপাশে রেখে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে সকলের ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কোণঠাসা করার জন্য দাম বৃদ্ধি, বেকারত্ব, সহ বিজেপি-নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে বিষয়গুলি তুলে ধরতে সম্মত হয়েছেন।

কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা উদ্ধব ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে, এনসিপি (শারদ পাওয়ার গোষ্ঠী) নেতা সুপ্রিয়া সুলে এবং জয়ন্ত পাটিল সহ ইন্ডিয়া জোটের বেশ কয়েকজন নেতা আসন্ন লোকসভায় রণকৌশল নির্ধারণে এক বৈঠকেও মিলিত হন।

Parliament Modi Government
Advertisment