আর হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি বিধানসভা নির্বাচনের। শাসক-বিরোধী সবপক্ষই ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। কিন্তু ভোটের মুখে শাসকজোটে ফাটল দেখা দেখা দিল। মেঘালয় সরকার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভার অনুমতি বাতিল করেছে। যার জেরে শাসকজোটের এনপিপি এবং বিজেপর মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্র পশ্চিম গারো পাহাড়ে দক্ষিণ তুরা এলাকায় অবস্থিত পি এ সাংমা স্টেডিয়ামে মোদীর সভার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি আর্নেস্ট মাওরি এই ঘটনাকে বিরাট অপমান হিসাবে কটাক্ষ করেছেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানিয়েছেন, "এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিয়েছিল। ভাবুন সেই স্টেডিয়ামে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভার অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।"
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, এতে সরকারের কোনও হাত নেই। কারণ ক্রীড়া দফতর ওই অনুমতি বাতিল করেছে। তাঁর দাবি, "নির্বাচন কমিশনের তরফে সভা বাতিলের সুপারিশ আসে। তার ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই এনপিপি বা আমার তরফে কিছু করার নেই। আমাদের নাম টেনে আনার কোনও যুক্তি নেই। এমনকী আমারও অনেক সভার অনুমতি বাতিল হয়েছে।"
আরও পড়ুন নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় জ্বলছে ত্রিপুরা, খুন সিপিএম সমর্থক
প্রসঙ্গত, মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কনরাডের বাবা পি এ সাংমার নামে এই স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে খরচ পড়েছে ১২৭ কোটি টাকা। আর গত বছর ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন করেন কনরাড সাংমা। এই ফুটবল স্টেডিয়ামটি দেশের প্রথম আন্তর্জাতিক মানের প্রাকৃতিক স্টেডিয়াম। কনরাড বলেছেন, "বিজেপি খামোকা এটাকে ইস্যু করছে। কিন্তু আমরা আগেই বলেছি, মাঠের দুটি ভাগ রয়েছে। প্রথমটি ফুটবলের জন্য, যেটা উদ্বোধনের পর ব্যবহারযোগ্য। বাকিটা ইন্ডোর স্টেডিয়াম, সেখানে সুইমিং পুলও রয়েছে। সেটা এখনও তৈরি হয়নি। সেটাই সমস্যার।"
তিনি আরও যোগ করেছেন, "প্রধানমন্ত্রী সভায় প্রচুর জনসমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমি মনে করি জেলা প্রশাসনের মনে হয়েছে, যদি প্রচুর লোক আসে তাহলে স্টেডিয়ামের প্রাকৃতিক টার্ফ নষ্ট হতে পারে। তাছাড়া এখানে পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা নেই।"
রবিবার বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ঋতুরাজ সিনহা সাংবাদিকদের বলেছেন, "সত্যি এটা আশ্চর্যের যে তৈরি স্টেডিয়াম প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। তা-ও আবার উদ্বোধনের দুমাস পর। তার মানে কি কনরাড সাংমা আর মুকুল সাংমা আমাদের ভয় পাচ্ছেন? ওরা মেঘালয়ে বিজেপির ঝড় আটকাতে চাইছেন।"