/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2020/01/m-1-1.jpg)
বেলুড় মঠে প্রধানমন্ত্রী।
বেলুড়েও মোদীর মুখে ৩৭০ ধারা বিলোপ,সিএএ-এর কথা। বাংলায় দাঁড়িয়ে নাম না করে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বিরোধী শিবিরকে। এদিন নয়া আইনের সমর্থনে মুখ খোলেন তিনি। ফের বলেন, 'সিএএ নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়ায় জন্য নয়, নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন।' বিরোধীদের নিশানা করে পড়ুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'যা পড়ুয়া, যুব সম্প্রদায় বুঝতে পারছেন তা অনেক প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বুঝতে পারছেন না। অনেকেই সিএএ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছেন। যুব সমাজই ভারত নির্মাণের ভরসা। অনেক তরুণ সিএএ নিয়ে ভুল বুঝলেও তাদের সঠিকটা বোঝাতে হবে। এটা আমাদেরই কর্তৃব্য। ' তাঁর কথায় সমস্যা দীর্ঘ দিন ফেলে রাখতে নেই। 'ভারত সরকার এই আইনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেই পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে কী ব্যবহার করা হয় তা স্পষ্ট হয়েছে।'
রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য সফরের দ্বিতীয় দিন। শনিবার একাধিক কর্মসূচির পর বেলুড় মঠে যান মোদী। সেখানেই ইন্টারন্যাশনাল গেস্ট হাউসে রাত্রীযাপন করেন তিনি। এদিন সকালে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিবস উপক্ষে 'জাতীয় যুব দিবসে' যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, 'বেলুড়ে আসা আমার কাছে ঘরে আসার মত। বেলুড়ে আসা কোনও তীর্থের থেকে কম নয়। স্মামী আত্মস্থানন্দের জন্যই আমি আজ এখানে।'
আরও পড়ুন: কী কথা হল মোদীর সঙ্গে? খুলে বললেন মমতা
শনিবার বিকেলে কলকাতায় এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বিবামবন্দর থেকে তিনি রাজভবনে আসেন। সেখানেই তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা আমার সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে, সৌজন্যের মধ্যে পড়ে। রাজ্যের ২৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা আছে কেন্দ্রের থেকে। তাছাড়া বুলবুলের ৭ হাজার কোটি টাকা বাকি রয়েছে। রাজ্যের টাকা যেটা আমাদের প্রাপ্য, তা মিটিয়ে দেওয়া হয় যাতে, তা বলেছি।' এরপরই মমতা বলেন, 'আজ বলেছি, আপনি আমার অতিথি, জানি না বলা ঠিক হবে কিনা, তবুও বলছি, সিএএ, এনপিআর, এনআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। মানুষে মানুষে বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। কোনও মানুষের উপর কোনও অত্যাচার যেন না হয়। এটা দেখার জন্য বলেছি। সিএএ-এনআরসি নিয়ে আপনারা ভাবুন ফের। আমরা চাই সিএএ-এনআরসি বাতিল হোক।'
বেলুড়ে মোদীর শ্রদ্ধার্ঘ।
পরে টিএমসিপির সিএএ বিরোধী ধর্নামঞ্চে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে ফের মিলিয়াম পার্কে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা। সেখানে রাজ্যপাল ধনকড়ের সঙ্গেও কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে।
আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজে পড়ানো হোক সংবিধানের প্রস্তাবনা, মমতাকে চিঠি এসএফআইয়ের
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরের বিরোধিতায় পড়ুয়াদের বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং চত্বর। ‘গো ব্যাক মোদী’ এই স্লোগানে মুখরিত মহানগরের বিভিন্ন প্রান্ত। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্রই মোদী বিরোধিতায় পথে নামেন পড়ুয়াদের একাংশ। পড়ুয়াদের মিছিল আটকাতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় পুলিশকে। পুলিশের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পুলিশ-পড়ুয়া ধস্তাধস্তি বেধে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাথা গরম করবে না। শান্ত হও’’। এরপরই বন্দেমাতরম স্লোগান দেন মমতা।
ডোরিনা ক্রসিংয়ে ধর্নায় প্রতিবাদী পড়ুয়ারা। ছবি: শশী ঘোষ
এদিনও ধর্মতলায় কালো পতাকা হাতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে ধর্নায় বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।