হুগলির কোন্নগরের হীরালাল পাল কলেজে বাংলার অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে মারধরের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতরা হল সন্দীপ পাল ও বিজয় সরকার। এ প্রসঙ্গে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভ মাইতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘‘ধৃতরা কলেজের ছাত্র নয়। টিএমসিপির সঙ্গে এদের কোনও যোগ নেই’’। বুধবার ওই কলেজের অধ্যাপককে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। যদিও টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তাঁদের সংগঠনের কেউ জড়িত থাকলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে’’। অন্যদিকে, এবিভিপির রাজ্য নেতা সুবার হালদারের বক্তব্য, ‘‘নেত্রীর ২১ জুলাইয়ের বক্তব্যের মান্যতা দিতেই অধ্যাপকের ওপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন’’।
আরও পড়ুন: অনশনের এগারো দিন, ভুখা পেটে জ্ঞান হারালেন শিক্ষিকা
কী ঘটেছিল?
জানা গিয়েছে, বুধবার হীরালাল পাল কলেজের এম এ ফোর্থ সেমিস্টারের ছাত্রীরা বেঞ্চে উঠে সেলফি ও ছবি তুলছিল। এটা জানতে পেরে কলেজের টিএমসিপি নেতৃত্ব তাদের বেঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলে। এই নিয়ে বচসা শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে। এম এ ছাত্রীদের অভিযোগ, জুনিয়র ছাত্রীরা তাদের তুই-তোকারি করে। এম এ-র এক ছাত্রীও কটূক্তি করে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার জন্য অধ্যাপকদের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ দুঃখপ্রকাশ করে। তখনকার মতো বিষয়টা মিটে যায়। টিএমসিপি সমর্থকরা তখনই তৃণমূল জিন্দাবাদ বলতে বলে। এম এ ছাত্রীরা তা বলতে অস্বীকার করে। তখন দুপক্ষে হাতাহাতিও হয়। এরপরই কলেজ গেটে তালা মেরে এম এ ছাত্রীদের আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
ছাত্রদের হাতে প্রহৃত শিক্ষক! অধ্যাপককে ‘বেধড়ক মার’ টিএমসিপির #iebangla pic.twitter.com/h8AWBFPYCu
— IE Bangla (@ieBangla) July 25, 2019
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য কী ঘোষণা করতে চলেছেন শিক্ষামন্ত্রী?
এরপর বিকাল ৫টা নাগাদ বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ সুব্রত চট্টোপাধ্যায় ছাত্রীদের নিয়ে কলেজ থেকে বেরোনোর চেষ্টা করেন। কলেজ গেটে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছাত্রদের কিল-ঘুষি খেয়ে মাটিতে বসে পরেন অধ্যাপক। এ প্রসঙ্গে সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাকে মেরেছে ছাত্র সংসদের ছেলেরা, এই কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্ব। আমার সঙ্গে কোনও দ্বন্দ্ব হয়নি আজকে। কিন্তু আমি ওদের টার্গেট। আমার সঙ্গে ওদের রাজনৈতিক বিরোধ নেই’’।
অধ্যাপককে নিগ্রহের ঘটনা প্রসঙ্গে টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘স্যারকে মারধরের সময় আটকান কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক। যে দুজন মেরেছে তারা সম্ভবত কলেজের ছাত্র নয়। আমি এই ঘটনার ধিক্কার জানাই, নিন্দা জানাই। এই ঘটনা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সমর্থন করে না। প্রশাসন যেন তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়। আমাদের সদস্য হলে কড়া পদক্ষেপ করব’’। এবিভিপির বক্তব্য ‘‘ধর্মতলার সভায় নেত্রী যা বার্তা দিয়েছিলেন তার মান্যতা দিচ্ছে। পেশী শক্তির আস্ফালন চলছে। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করছি। ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক’’।