কোকবোরোক ভাষার জন্য রোমান হরফের দাবিতে বুধবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় প্রাসাদ কম্পাউন্ডের কাছে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 'রোমান স্ক্রিপ্ট ফর কোকবোরোক চোবা' (আরএসকেসি) সংগঠনের সদস্যরা এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। দাবি পূরণ না-হলে তাঁরা 'সর্বাত্মক আন্দোলন'-এর হুমকি দিয়েছেন।
কোকবোরোক হল ত্রিপুরার ১৯টি উপজাতি সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা। এই ভাষার এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে। শুধু তাই নয়, কোকবোরোক ত্রিভাষা নীতির আওতায় পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরায় অন্যতম সরকারি ভাষা হিসেবেও স্বীকৃত। রাজ্যের বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম এই কোকবোরোক ভাষা। কিন্তু, এর কোনও লিপি নেই।
এখনও পর্যন্ত কোকবোরোক ভাষা লিখতে বাংলা বা রোমান হরফ ব্যবহার করা হয়। ২০১৮ সালে বিজেপি প্রথমবার ত্রিপুরায় সরকার গঠন করার পর থেকে, কোকবোরোক ভাষার জন্য দেবনাগরী বা হিন্দি হরফ চালু করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ-আন্দোলন। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, সংস্কৃতি কর্মীরা রাজ্যের বিজেপি সরকারের কোকবোরোকের সঙ্গে হিন্দি মেশানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। সেই আন্দোলন এখনও চলছে শুধু নয়। বরং, তা ক্রমশ বাড়ছে। যার জেরে পার্বত্য রাজ্যে শুরু হয়েছে চরম উত্তেজনা।
তারমধ্যেই এবছর সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী পড়ুয়াদের কোকবোরোক ভাষায় প্রশ্নের উত্তর বাংলা হরফে লিখতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। আর, তারপরই কোকবোরোকের জন্য রোমান হরফ চালুর দাবি তীব্র করেছেন আন্দোলনকারীরা। এই আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন রয়েছে ত্রিপুরার প্রধান বিরোধী দল তথা উপজাতিদের রাজনৈতিক সংগঠন তিপ্রা মোথার। তারা বিধানসভায় কোকবোরোক ভাষার প্রতি অবিচার নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- বাঁধ ভেঙে প্লাবিত বিস্তীর্ণ অঞ্চল, তা ঘিরে কেন চরমে ইউক্রেন-রাশিয়া দ্বন্দ্ব?
জবাবে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, রোমান হরফের প্রশ্ন নেই। অন্য কোনও ভারতীয় হরফ কোকবোরোকের জন্য চাইলে তার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার এই উত্তর তিপ্রা মোথার সদস্যদের পছন্দ হয়নি। তাঁরা বিধানসভার অধিবেশনকক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন।