নতুন বছরে ফুটবলের প্রাপ্তি
বিশ্ব ফুটবলে বর্তমান সময়ের দুই মুকুটহীন সম্রাট হলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। সদ্য সমাপ্ত গত বছর তাঁদের অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখেছে। সেই যাত্রা এই বছরও অব্যাহত থাকবে। এমনটাই আশা বিশ্ব ফুটবলের। সঙ্গে পেপ গুয়ার্দিওয়ালার প্রতিও বিশ্ব ফুটবলের বিপুল আশা। তাঁর প্রতি আশা, তিনি বিশ্ব ফুটবলকে ট্রফি এবং পদক দিয়ে সমৃদ্ধ করার জন্য যাবতীয় চেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। আরও ভালো কিছু করে দেখাবেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাঁদের গৌরবময় ঐতিহ্য ধরে রাখবে। পাশাপাশি, সৌদি আরব ইউরোপের সেরা ফুটবলারদের তাদের দেশে খেলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবে। আর, এজন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করবে।
আরও পড়ুন- ভারতের নেতৃত্বে দুর্বল ব্যাটার কেন! রোহিতকে তুলোধোনা করে বোমা ফাটালেন এবার সুপারস্টার
রোনাল্ডোর অনুপ্রেরণা
এবছর জুনে মেসির বয়স হবে ৩৭। ক্রিশ্চিয়ানো রোনান্ডো ফেব্রুয়ারিতেই ৩৯ বছর বয়সে পা দিয়েছেন। দুজনেই বিশ্ব ফুটবলকে অনেক দিয়েছেন। তারপরও তাঁদের প্রতি প্রত্যাশা মেটেনি। তার মধ্যেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন রোনাল্ডোর খেলার মূল ইন্ধন। তিনি বহু ট্রফি পেয়েছেন। কিন্তু, বিশ্বকাপ আজও তাঁর অধরা। পরবর্তী বিশ্বকাপের সময় রোনাল্ডোর বয়স হবে ৪১ বছর। কিন্তু, বয়স তাঁর কাছে বাধা নয়। তিনি ইউরোপ-সহ বিভিন্ন জায়গায় বহু গোল করেছেন। ২০২৩ সালে রোনাল্ডোর মত কেউ গোল করেননি। রোনাল্ডো আল নাসের এবং পর্তুগালের হয়ে ৫৯টি খেলায় ৫৪টি গোল করেছেন। ইউরো ২০২৪ কোয়ালিফায়ারে রোনাল্ডোই সবচেয়ে বেশি, ১০ গোল করেছেন। হয়তো মেসি যতদিন খেলবেন, রোনাল্ডোও ততদিনই খেলবেন। ফুটবল তাঁদের মত দীর্ঘ প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখেনি। এই দুই বিশ্বসেরা ফুটবলার, একটি দলগত খেলাকে দুই-ফুটবলারের প্রতিযোগিতায় পরিণত করেছেন। দেখে মনে হবে, ফুটবল দুনিয়া যেন এই দুই ফুটবলারকে ছেড়ে দিতে নারাজ।
আরও পড়ুন- IPL হলো অলিম্পিক! ভারতের ক্রিকেট লিগকে গর্বের সিংহাসনে বসালেন অজি কিংবদন্তি
মেসির অনুপ্রেরণা
একটি এমএলএস লিগ শিরোনাম? তা থেকে পাওয়া রাজস্ব? আরও একটি বিশ্বকাপ এবং কোপা? নাকি পায়ে বল ছাড়া তাঁর একাকীত্বের ভয় লাগে? ময়দানের টানা হাততালি, জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে না-পারলে তাঁর কি খারাপ লাগে? সম্ভবত, এই সব ভয়ই তাঁদের ফুটবলের প্রতি উজ্জ্বীবিত রাখছে। প্রাণের ভালোবাসা হারানোর ভয়ই তাঁদের সজীব রাখছে। এই খেলা তাঁদের অস্তিত্বকে সংজ্ঞায়িত করেছে। যেমনভাবে তারা ফুটবলকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। ফুটবল তাদের ছাড়া একটি যুগও কল্পনা করতে পারে না। আর, তাঁরাও খেলা ছাড়া কিছু কল্পনা করতে পারেন না। যখনই তাঁদের পায়ের কাছে বল থাকে, তখনই খেলার প্রতি একই ভালবাসা তাঁদের চোখ ঝিকমিক করে তোলে। যেমনটি তাঁরা প্রথমবার বল পায়ে অনুভব করেছিলেন। তাঁরা মাদেইরার ছেলে ও রোজারিওর ছেলে হিসেবে নিজেদের আজও আগের মতই তুলে ধরতে মরিয়া। চারপাশের পৃথিবীটা বদলে যাবে। ফুটবলও বদলে যাবে। কিন্তু তাঁরা যেন, আজীবন ফুটবল আকাশের দুই ধ্রুবতারা থেকে যাবেন। ফুটবলের দর্শক এবং ফুটবল পর্যবেক্ষকরা অবশ্য এনিয়ে কোনও অভিযোগ করবেন না। কারণ, মেসি আর রোনাল্ডো ইতিমধ্যেই ফুটবল চেতনার একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।
নজর থাকবে গুয়ার্দিওয়ালার ওপরও
এর মধ্যে যে মানুষটি ক্রমাগত তাঁর ফুটবল দৃষ্টিভঙ্গিতে নানা স্তর যুক্ত করতে শুরু করেছেন, তিনি হলেন মেসির বার্সেলোনার পরামর্শদাতা পেপ গুয়ার্দিওয়ালা। যিনি তিকিতাকা ফুটবলকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছেন। ড্রিবল ফুটবলের বদলে পাসিং ফুটবলকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছেন। তিনিই আবার নিজের গতিপথ বদলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এই মরশুম তাঁর কোচিংয়ে পাসিং ফুটবলের বদলে দ্রুতগতিতে বল লব করে এগিয়ে দেওয়া, ড্রিবলিংয়ের কারুকার্য ভরা ফুটবল শিল্প দেখতে পারে। কারণ, তাঁর ভাণ্ডারে আছেন জেরেমি ডকু, মাতেও কোভাসিক, ম্যাথিউস নুনেস ও জোসকোর মত ভালো ড্রিবলার। তাঁর কোচিংয়ে দল ফের লিগ শিরোপা জিতবে কি না, এবছর তারও পরীক্ষা।
আরও পড়ুন- টেস্টে এই কারণেই ডুবছে গিল! শুভমানকে এবার তুলোধোনা করলেন গাভাসকার
ম্যাঞ্চেস্টার সিটি এবং ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড
ম্যাঞ্চেস্টার সিটি যখন ক্রমশ অগ্রগতি ঘটাচ্ছে, সেই সময় ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের পতন অব্যাহত। গ্লাজাররা তাঁদের ২৫ শতাংশ শেয়ার বিলিয়নেয়ার জিম র্যাটক্লিফের কাছে বিক্রি করেছেন। যাঁর বিশ্বস্ত লোকজন এখন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের খেলাধূলার দিকটি দেখভাল করবে। তবে, বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি এখন এতটাই এগিয়ে গিয়েছে, যে তাদের স্পর্শ করতে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে ব্যাপক পরিশ্রম করতে হবে।