/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/10/KL-Rahul.jpg)
KL-Rahul: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উইকেট রক্ষক হিসেবে দেখা যাবে না। টুইটার)
বিশ্বকাপের পঞ্চম ম্যাচ। সেই ম্যাচে থ্রিলারের কোনও কমতি ছিল না। রোমাঞ্চকর ম্যাচে রোহিতের নেতৃত্বে ভারত ৬ উইকেটে জয় হাসিল করল। জয়ের জন্য ভারতের টার্গেট ছিল মাত্র ২০০ রান। সহজ টার্গেট থাকলেও ভারতের জয় সহজে এল না। প্রথম দু-ওভারেই ভারত ঈশান কিষান, রোহিত শর্মা এবং শ্রেয়স আইয়ারের উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। তিন তারকাই প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়েছিলেন রানের খাতা না খুলেই। জস হ্যাজেলউড এবং মিচেল স্টার্ক ধসিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের টপ অর্ডারকে। স্কোরবোর্ডে ভারতের রান সেই সময় ছিল মাত্র ২ রান।
এরপরেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন কেএল রাহুল এবং বিরাট কোহলি। দুজনে ১৬৫ রানের পার্টনারশিপ গড়ে যান। কোহলি ৮৫ রানে হ্যাজেলউডের শিকার হয়ে ফিরে গেলেও কেএল রাহুল ৯৭ রানে অপরাজিত থাকলেন। ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ফিনিশিং লাইনও পেরিয়ে দেন তারকা।
তবে দলকে জিতিয়েও খুশি হলেন না কেএল রাহুল। জয়ের কাছাকাছি যখন ভারত পৌঁছে গিয়েছিল, সেই সময় কেএল রাহুল ৯১ রানে ব্যাটিং করছিলেন।জয়ের জন্য ভারতের সেই সময় দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। তবে রাহুল সটান ছক্কা মেরে ম্যাচ ফিনিশ করেন। এবং হতাশায় ভেঙেও পড়তে দেখা যায় রাহুলকে। মাত্র স্কোরবোর্ডে পর্যাপ্ত রান বেঁচে না থাকায় শতরান হল না তাঁর। মাত্র ৩ রানের জন্য খালি হাতে ফিরতে হল তাঁকে।
ঘটনা হল, কেএল রাহুল স্কোরবোর্ডে পাঁচ রান বেঁচে থাকা অবস্থাতেই শতরান করতে চেয়েছিলেন। কীভাবে? ৪২ তম ওভারে প্যাট কামিন্স বল করছিলেন। তিনি প্ৰথমে বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে আরও এক রান বাকি থাকত জয়ের জন্য। সেই রান তোলার জন্য ছক্কা হাঁকালেই শতরানের মুখ দেখতে পেতেন রাহুল। তিনি কামিন্সের বলে বাউন্ডারিই হাঁকাতে চেয়েছিলেন। তবে বল ওভার বাউন্ডারি হয়ে যাওয়ায় তাঁর প্ল্যান ভেস্তে যায়। সবমিলিয়ে ১১৫ বলে ৯৭ রানের ইনিংস খেলার পথে কেএল রাহুল হাঁকান জোড়া ছক্কা, আট বাউন্ডারি।
Rohit Sharma appreciated and Hugged KL Rahul after the game. #INDvAUS#INDvsAUSpic.twitter.com/BMxJ0w0hyo
— TEJASH (@TEJASH_CRICINFO) October 9, 2023
কেন তিনি হতাশ? ম্যাচের পরেই ভারতের প্ৰথম ম্যাচের নায়ক জানাচ্ছেন, "শেষ বলে দারুণ কানেকশন হয়েছিল। শেষদিকে স্রেফ হিসেব করছিলাম কীভাবে শতরানে পৌঁছনো যায়। একটাই উপায় ছিল। বাউন্ডারির পর ছক্কা হাঁকানো। সেরকমই প্ল্যান ছিল। অন্য কোনও দিন সেটা হবে।"
ম্যাচে নেমে পড়তে হয়েছিল একদম শুরুতেই। টানা তিন উইকেট ভারত খুইয়ে ফেলায়। রাহুল জানাচ্ছেন, "কোহলির সঙ্গে সবসময় আলোচনা করছিলাম। টানা ফিল্ডিংয়ের পর শাওয়ারে গিয়েছিলাম। আশা ছিল, আধঘন্টা মত বিশ্রাম করব। তবে আমাকে সাত তাড়াতাড়ি নেমে পড়তে হল। বিরাট বলেছিল, কিছুক্ষণের জন্য টেস্ট ক্রিকেট মোডে ব্যাটিং করতে হবে। দলের ভূমিকায় কাজে আসতে পেরে খুশি। ফাস্ট বোলারদের জন্য ইনিংসের শুরুতে ভাল সাহায্য ছিল পিচে। শেষদিকে শিশিরের জন্য অস্ট্রেলীয় বোলারদের কাজ আরও কঠিন হয়ে গেল। বল ভালো ব্যাটে আসছিল। টু-পেসড উইকেট ছিল। এই পিচে ব্যাটিং করা মোটেই সহজ নয়। তবে খুব কঠিন এমনটাও নয়। বেশ ভালো উইকেট। দক্ষিণ ভারতে যা হয়ে থাকে।"
শতরান না হলেও উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে বড়সড় নজির গড়ে গেলেন কেএল রাহুল। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস রয়েছে রাহুল দ্রাবিড়ের দখলে। ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৫ করেছিলেন কিংবদন্তি। এতদিন এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল এমএস ধোনির ২০১১ বিশ্বকাপের ফাইনালে ঐতিহাসিক ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংস। যে ইনিংসে ভর করে ভারত ওয়ার্ল্ড কাপ জিতেছিল দ্বিতীয়বারের মত। কেএল রাহুল আপাতত ধোনিকে সরিয়ে এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেন।