আইপিএলের শুরুটা খারাপ হয়নি কেকেআরের। লিগের প্ৰথম চারটে ম্যাচেই তিনটে জিতে নিয়েছিল শ্রেয়স আইয়ারের নাইটরা। তবে এর পরেই টানা পাঁচটা ম্যাচ হেরে কেকেআর প্লে অফের লড়াই থেকে ক্রমশ দূরে সরে যায়। তারপরে টুর্নামেন্ট যত এগিয়েছে, ততই ধারাবাহিকতা হারিয়েছে বেগুনি-সোনালী জার্সিধারীরা। শেষমেশ ১৪ লিগ ম্যাচে কেকেআরের নামের পাশে জয়ের সংখ্যা ছয়টি। শেষ ম্যাচে হেরে কেকেআরের প্লে অফে ওঠার স্বপ্ন পাকাপাকিভাবে চূর্ণ হয়।
গোটা মরশুম জুড়েই কেকেআর ওপেনিং জুটি নিয়ে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলেছে। ফিঞ্চ, রাহানে, স্যাম বিলিংস, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, সুনীল নারিন, বাবা অপরাজিত- এই ছয় তারকাকে বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওপেনার হিসাবে নামানো হয়েছে। তবে কোনও জুটিই শেষমেশ দলের ভরসা জোগাতে পারেনি। বোলিং বিভাগে কেকেআরের সবথেকে উদ্বেগের বিষয় ডেথ ওভারের স্পেল। প্রতিপক্ষের উইকেট তোলা তো দূর, রানের পর রান বিলিয়ে নাইট বোলাররা ম্যাচের পিছিয়ে পড়েছেন ডেথ বোলিংয়েই।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গলে বিনিয়োগকারী নয়, অন্য ভূমিকায় Man U! IPL-এর মঞ্চে বিরাট আপডেট সৌরভের
আগামী মরশুম শুরুর আগে কেকেআর বেশ কয়েকজন তারকাকে রিলিজ করে দিতে পারে। ক্রিকট্র্যাকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেকেআরের ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে আপাতত তিন তারকা-
ফিঞ্চ: আইপিএলে নয়টি আলাদা আলাদা ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলে রেকর্ড তৈরি করেছেন অজি ক্যাপ্টেন। কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই সেভাবে পারফর্ম করতে পারেননি। তাই থিতু হতে পারেননি কোনও দলেই। এবারের নিলামে অবিক্রিত ছিলেন ফিঞ্চ। তবে শেষ মুহূর্তে হেলস নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় ফিঞ্চকে নেয় নাইট ম্যানেজমেন্ট।
প্ৰথম ম্যাচে ফিঞ্চের অবদান মাত্র ৭ রান। পরের ম্যাচে রাজস্থানের বিপক্ষে ২৮ বলে ৫৮ করলেও সেই রানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি। এরপরের তিন ম্যাচে তাঁর রান যথাক্রমে ৩, ০ এবং ১৪।
ওপেনারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতা গোটা মরশুম জুড়েই ভুগিয়েছে কেকেআরকে। সেই কারণে লিগের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে বাদ পড়েন ফিঞ্চ। লিগের শেষ তিন ম্যাচে তাঁকে নামায়নি কেকেআর। নতুন মরশুম শুরুর আগে তাঁকে সম্ভবত কেকেআর রিলিজ করে দেবে।
আরও পড়ুন: ইডেন মোটেই ঘর নয়! বাংলা ছেড়ে ঋদ্ধি কি মোদির গুজরাটে, বড় ইঙ্গিত অভিমানী তারকার
অজিঙ্কা রাহানে: আইপিএলে বরাবর শিট এঙ্করের ভূমিকায় খেলতে চেয়েছেন রাহানে। বেশ কয়েকবার তিনি এই স্ট্র্যাটেজিতে সফল হলেও দল অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাহানের ডিফেন্সিভ ব্যাটিংয়ে ভুগেছে। অনেক আশা করে কেকেআর এবার নিলামে অভিজ্ঞ তারকাকে ১ কোটি টাকার বেস প্রাইসে কিনেছিল।
টুর্নামেন্টের প্ৰথম ম্যাচেই রাহানে সিএসকের বিরুদ্ধে ৩৪ বলে ৪৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। তবে পরের চার ইনিংসে তাঁর স্কোর যথাক্রমে ৯, ১২, ৭, ৮। টানা ব্যর্থ হওয়ায় কেকেআর ম্যানেজমেন্ট রাহানেকে প্ৰথম একাদশের বাইরে রাখতে বাধ্য হয়।
শেষ দুই ইনিংসে রাহান্স করেন ৪৮ বলে ৫৩। লিগের শেষ ম্যাচের আগে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কবলে পড়ে ছিটকে যান। ৭ ম্যাচে মাত্র ১৩৩ করা তারকাকে রিলিজ করার পথেই হাঁটবে কেকেআর।
শিভম মাভি: আইপিএলে বহু তরুণ বোলার উঠে আসছেন প্রত্যেক মরশুমে। কেকেআর ভরসা রেখেছিল শিভম মাভির ওপর। তবে নাইট তুর্কি মোটেই বল হাতে সেই আস্থার মর্যাদা দিতে পারেননি। ২০১৮ থেকে কেকেআর স্কোয়াডের অংশ হয়েও নজর কাড়তে ব্যর্থ হয়েছেন প্রত্যেক সিজনেই। এবার কেকেআরের হয়ে ১০ ম্যাচ খেলে শিভম মাভি নিয়েছেন মাত্র ১১ উইকেট। ইকোনমি ৭.২৪। ভাবা হয়েছিল কেকেআরের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। শেষ পাঁচ ম্যাচে মাভি নিয়ম করে ৪ ওভারের কোটায় ৩০+ রান খরচ করেছেন। মাত্র চার উইকেট দখল করেছেন।
লখনৌ ম্যাচে মাভি চার ওভারে ৫০ রান খরচ করে বসেন। এর মধ্যে এক ওভারে মাভি দিয়ে দেন ৩০+ রান। তারপরই দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। কেকেআরের শেষ তিনটে লিগ ম্যাচে মাভিকে খেলানোর সাহস করেনি ম্যানেজমেন্ট। নতুন মরশুমে মাভিকে ছেড়ে অন্য পেসারকে দলে নেওয়ার জন্য ঝাঁপাবে কেকেআর।