রক্ষকই যখন ভক্ষক। বিহারের ছায়া যেন এ রাজ্যেও। যেখানে নিশ্চিত আশ্রয় পাওয়ার কথা, যাঁদের ওপর ভরসা করেই দিন কাটাতে এসেছেন, সেই হোমের কর্মীরাই দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন করেছে। এমনই অভিযোগ করছেন হাওড়ার জয়পুর হোমের এক মূক ও বধির কিশোরী-সহ অন্যান্যরা। ইশারায় অভিযোগ জানানোর পর সেই শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতার করা হল ওই সরকারি সাহায়তাপ্রাপ্ত হোমের তিন কর্মীকে। পুলিশ সূত্রে খবর, হোমের মেয়েদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই হোমেরই তিন কর্মীকে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জয়পুর থানা এলাকার পার বাক্সির চিরনবীন নামে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত হোমে। মূক ও বধির কিশোরাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উলুবেড়িয়া মহিলা থানায়। এই ঘটনায় তোলপাড় হাওড়া।
জানা যাচ্ছে, এই হোমগুলোর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মাঝে মধ্যেই পরিদর্শন করেন সরকারি আধিকারিকরা। শুক্রবার সকালে এমনই নিয়মমাফিক পরিদর্শনে গিয়েছিলেন হাওড়ার চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার। সেই সময় ওই আধিকারিককে ইশারা করে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে এক মূক ও বধির কিশোরী-সহ বেশ কয়েকজন আবাসিক। তাঁদের অভিযোগের সারবত্তা ছিল বলেই মনে করেছিলেন ওই আধিকারিক। আবাসিকরা জানান, তাঁরা নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন, ওই হোমে থাকা তাঁদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। এরপর পুরো ঘটনার কথা জয়পুর থানা-সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিকদের জানান চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার।
অভিযোগ পেয়েই নড়চড়ে বসে প্রশাসন। শুক্রবার রাতেই ওই হোমে তল্লাশি চালায় জয়পুর থানার পুলিশ। এরপরই আবাসিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিন হোম কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি, উদ্ধার করা হয়েছে নির্যাতিতা মহিলাদেরও। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় উলুবেড়িয়া মহিলা থানায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা হলেন প্যারামেডিক্যাল কর্মী প্রতাপ প্রামাণিক, নিরাপত্তা কর্মী ফনিমোহন বাগ ও গাড়ি চালক বাবলু ধাড়া। অভিযুক্তরা সকলেই ওই হোমের কর্মী। হোমের সম্পাদক সুকুমার সাউ জানান, তিনি হোমের 'অনারিয়াম সম্পাদক'। ফলে, সবসময় হোমে থাকতে পারেন না। তাঁর দাবি, এমন জঘন্য কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। একইসঙ্গে তিনি বলেন, অপরাধ প্রমাণ হলে হোমের পক্ষ থেকেও কড়া পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশের দাবি, জেরার সময় ধৃতরা দোষ স্বীকার করেছে।