রাজীব কুমার কমিশনার থাকাকালীন সারদা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। তারপর একাধিকবার ওই আইপিএস-এর গ্রেফতারি দাবি করেছেন কুণাল। বর্তমানে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। দীর্ঘদিন বাদ ঘরওয়াপসি হল রাজীব কুমারেরও। পুলিশের কাজে ফেরানো হল তাঁকে। বুধবার রাজ্য পুলিশের অস্থায়ী ডিজি পদে রাজীব কুমারের নামে সিলমোহর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই রাজীবের উত্থান নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যের শাসক দলের এই শীর্ষ নেতা। রীতিমত বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ।
'নির্দোষের জীবন নষ্ট করবেন না'
রাজীব কুমারের ডিজিপি হওয়ার খবর ছাড়তেই কুণাল ঘোষ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'উনি দক্ষ অফিসার। মাঝখানে ওঁর সঙ্গে তীব্র বিরোধ ছিল। কালীপুজোর দিন CM-এর বাড়িতে বহুদিন পর দেখা ও সৌজন্যবিনিময় হয়। রাজীব, আপনাকে শুভেচ্ছা। তবে কখনও কারুর কথা শুনে আমার মত কোনো নির্দোষের জীবন নষ্ট করতে যাবেন না। এসব ভগবান ক্ষমা করেন না।'
'কোনও নির্দোষকে যেন ফাঁসানো না হয়' ইঙ্গিতে কী কুণাল অতীতের কথা মনে করিয়ে দিতে চাইলেন? তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এ নিয়ে খোলসা না করলেও তিনি যে মুখ্যমন্ত্রীর এ নির্দেশে সন্তুষ্ট নন সেটাই বোঝাতে চাইলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কুণালের অভিযোগ, সারদা মামলায় আইপিএস রাজীব কুমারে নির্দেশেই তাঁকে ফাঁসানো হয়েছিল। তাঁকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছিলেন কুণাল। পাহাড়ে রাজীব কুমার ও কুণাল ঘোষকে জেরাও করেছিল সিবিআই। ২০১৯ সালের পর কেটে গিয়েছে চার বছরের বেশি সময়। তারপর রাজনীতিতে স্বমহিমায় কুণাল ঘোষ। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর তেমন গর্জন না করলেও রাজীব কুমারকে খোঁচা দিতে ছাড়লেন না কুণাল।
কোন কোন বিতর্কে রাজীব কুমারের নাম
বিধাননগর ও কলকাতা পুলিশের কমিশনার থাকাকালীন নানা বিতর্কে নাম জড়িয়েছিল আইপিএস রাজীব কুমারের।
২০১৩ সালে সারদা অর্থ লগ্নি সংস্থার মামলায় তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল 'সিট' গঠন করে রাজ্য।‘সিট’-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখার দায়িত্বে ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। ২০১৩ সালে সারদাকাণ্ডে তৃণমূলের তৎকালীন রাজ্যসভার সাংসদ এবং বর্তমান ওই দলের মুখপাত্র এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিলেন তিনি।
কিন্তু ২০১৯ সালে সেই সারদা মামলাতেই রাজীবকে অভিযুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সিবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে সারদা মামলার তথ্য লোপাটের অভিযোগ ওঠে। সে সময় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিনও নিতে হয়েছিল রাজীবকে। সে বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাজীবকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তাঁর বাসভবনে চলে যায় সিবিআই। এর প্রতিবাদে ওয়াই চ্যানেলে ধর্না দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই দাবি করে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সারদা-সহ সমস্ত অর্থ লগ্নি সংস্থার টাকা ও সুবিধা কারা ভোগ করেছিলেন সে বিষয়ে তদন্ত করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজীব কুমার কোনও সহযোগিতা করেননি।
এরপর আইপিএস-কে প্রাশনিক দায়িত্বভার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বারত্মানে রাজীব কুমার তথ্য ও প্রযুক্তি দফতরের প্রধান সচিবের পদে দায়িত্বে ছিলেন।