Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

টেলিভিশন একমাত্র মাধ্যম যা সবার জন্য খোলা: বিশ্বজিৎ

Biswajit Ghosh Ke Apon Ke Por: টেলি অ্যাকাডেমি ২০১৯-এর সেরা অভিনেতার পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন কে আপন কে পর-নায়ক বিশ্বজিৎ ঘোষ। এই পুরস্কার ও টেলিভিশন মাধ্যম নিয়ে ঠিক কী ভাবেন অভিনেতা?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Star Jalsha serial Ke Apon Ke Por hero Biswajit Ghosh exclusive interview

বিশ্বজিৎ ঘোষ। ছবি: অভিনেতার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে

বাংলা টেলিভিশনের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়কদের অন্যতম বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে দর্শককে চুম্বকের মতো টেনে রেখেছে 'কে আপন কে পর'-এ পরম-জবার গল্প। এত দীর্ঘ সময় ধারাবাহিকভাবে উচ্চ টিআরপি রেটিং খুব কম ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে। পরম চরিত্রটিও অনেক টানাপোড়েন এবং ওঠানামার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে বিগত তিন বছরে। এবছর টেলি অ্যাকাডেমি-র সেরা অভিনেতার পুরস্কারে সম্মানিত অভিনেতা বিশ্বজিৎ ঘোষের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এল টেলিভিশন মাধ্যম সম্পর্কে তাঁর প্যাশন।

Advertisment

নতুন পুরস্কার নিয়ে কতটা এক্সাইটেড?

পুরস্কার এর আগে পেয়েছি ঠিকই কিন্তু সেরা অভিনেতার পুরস্কার এই প্রথম। দশ বছর পরে একটা ইচ্ছাপূরণ হল বলা যায়।

Biswajit Ghosh with Pallavi Sharma in Ke Apon Ke P 'কে আপন কে পর' ধারাবাহিকে পল্লবী শর্মার সঙ্গে। ছবি সৌজন্য: স্টার জলসা

তোমার কি মনে হয়, অনেকটা দেরিতে পেলে?

না, আমি মনে করি যেটা যখন তোমার পাওনা, তুমি সেই সময়েই পাবে। আগে পেলাম বা পরে পেলাম, এমন কিছুতে আমি বিশ্বাস করি না। অনেকে হয়তো এই রকম পরিস্থিতিতে মনে করতে পারেন যে আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কেউ পেল নেপটিজম বা অন্য কোনও কারণে। আমি ওসবে বিশ্বাস করি না। প্রত্যেকেই তো মনে করে সে যা করছে তা সবার চেয়ে ভালো। এটা বোধহয় ঠিক ভাবা হয় না। কোনও কিছু আগে বা পরে নেই, ঠিক সময়েই সবকিছু হয়।

আরও পড়ুন: টেলিপর্দার মেগা-খলনায়িকা হয়ে এলেন থিয়েটারের ‘দেবী’

টেলিভিশনে কেউ অভিনয় করে না, এমন একটা মনোভাব রয়েছে বাংলা বিনোদন জগতে। সেই ব্যাপারে তুমি কিছু বলবে?

আসলে ইচ্ছে থাকলেও অনেক সময় অভিনেতারা যেটা চাইছেন সেটা করে উঠতে পারেন না কারণ খুব সময়সীমা বেঁধে কাজ করতে হয়। কেউ অভিনয় করে না, এই কথাটা পুরোপুরি মানতে পারলাম না। তবে আমার মনে হয়, টেলিভিশনে টিকে থাকে তারাই, যারা প্রতিভাবান।

Star Jalsha serial Ke Apon Ke Por hero Biswajit Ghosh exclusive interview ছবি: অভিনেতার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে

তুমি টেলিভিশনের পাশাপাশি সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ করার কথা ভাবছ না?

সিনেমা করা আর সিরিয়াল করার মধ্যে, পার্থক্যটা কোথায় তুমি বলো তো? এখন তো সিনেমা বানানো হয় টিভিতে দেখানোর জন্য। এক একটা বাংলা সিনেমা হল রিলিজে খুব বেশি হলে একমাস চলে। তার পরে তো সেই টেলিভিশনেই দেখেন দর্শক। আর 'কে আপন কে পর'-এর মতো একটা সিরিয়াল তিন বছর পেরিয়ে এখনও চলছে ভালো টিআরপি নিয়ে। আমাদের ভালোবাসার লোক তো গ্রামের লোক, তারা ওয়েবসিরিজ দেখে না। আমাদের দর্শক এখনও টেপা ফোনই ব্যবহার করে, স্মার্টফোন নয়। টেলিভিশন এখনও একমাত্র মিডিয়াম যেটা সবার জন্য ওপেন, মাত্র একটা রিমোটে কানেক্ট করে দেয়। বাংলা ছবি চলবে কি চলবে না, লাভ করবে কি করবে না, সেই নিয়েই সবাই এত ব্যতিব্যস্ত থাকেন, একজন অভিনেতা আয় করবে কীভাবে?

টেলিভিশনের চরিত্রগুলো তো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেশ একমাত্রিক হয়ে থাকে, সেটা এই ফর্মটার জন্যই অনেকটা। কিন্তু অভিনেতা হিসেবে তোমার খিদেটা কীভাবে মিটবে?

খিদেটা মিটবে সেই সব ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কাজ করে যারা অন্য রকম ভাবছে। ধরো ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মমেকার যারা, তাদের ছবি বা এসআরএফটিআই-র কোনও ডিপ্লোমা ফিল্ম। তাদের কাছে হয়তো টাকা নেই, কিন্তু ভালো কাজের সম্ভাবনাটা রয়েছে। আমিও এখন যতটা চাপের মধ্যে কাজ করি, তেমন কোনও প্রজেক্টে সময় দেওয়া মুশকিল। নিশ্চয়ই সেটা হবে কোনও সময়। কাউকে কথা দিয়ে, কমিট করে সময় দিতে পারলাম না, সেটা আমি কখনো করি না, এক্ষেত্রেও করতে চাই না।

Star Jalsha serial Ke Apon Ke Por hero Biswajit Ghosh exclusive interview ছবি: অভিনেতার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে

আরও পড়ুন: ‘দিদার জন্যই আজ আমি এখানে’, সুপ্রিয়া দেবীকেই পুরস্কার উৎসর্গ শনের

তিন বছর পেরিয়ে যে ধারাবাহিকটা চলছে, পরমকে কি তুমি একটুও ভালোবাসলে?

পরম চরিত্রটা ভালো, একটু বেশিই ভালো। তবে বউকে জিজ্ঞেস করে সব কাজ করে, ওটা আবার আমার একদম পছন্দ নয় (হাসতে হাসতে)। নিজে একজন সায়েন্টিস্ট, অনেক সময় অনেক সিদ্ধান্তে লিবার্টি নিতেই পারত কিন্তু নেয়নি। তবে পরমকে যা গড়ার তা অনেক আগেই গড়ে ফেলেছি। দর্শক পরমকে ভালোবেসেছেন, সেটাই বড় কথা।

তোমার পরিবারে তো নতুন সদস্য এসেছে?

হ্যাঁ, সেটা আমার জীবনের একটা নতুন অধ্যায়। আমার ছেলের এখন পাঁচ মাস বয়স। এখন আমি বুঝতে পারি, মা আমার জন্য কী করেছিল। আমার ছেলে আমার জীবনের বন্ধ জানলাগুলো খুলে দিয়েছে। তবে সব সময় একটা ভয় থাকে, চিন্তা থাকে। আমার কাজের যা ধরন, আমি প্রায় কিছুই করতে পারি না। সবটাই আমার স্ত্রীকে সামলাতে হয়। সেই খারাপ লাগাটা রয়েছে।

অনেক নতুন প্রজন্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা এখন ইউনিটে। তুমি কি তাদের গাইড করো?

অনেকে বলে আমি নাকি এনজিও চালাই। সবাই মোটামুটি আমাকে গুরু বা টিচার বানিয়ে ফেলেছে। আমি যতটা পারি, ওদের সমস্যায় পাশে দাঁড়াই, টুকটাক হেল্প করতে থাকি। যেটা আমি এক্সপেক্ট করতাম সিনিয়রদের থেকে যখন আমি জুনিয়র ছিলাম। সিরিয়ালে তো পরমের বাবা পরিবারের মাথা আর অফ-স্ক্রিন মোটামুটি আমাকে ওরা হেড অফ দ্য ফ্যামিলি বানিয়ে ফেলেছে (হাসতে হাসতে)।

Team Ke Apon Ke Por 'কে আপন কে পর'-এর সহশিল্পীদের সঙ্গে।

আরও পড়ুন: পর্দার পিছনে আর নয়, এবার থেকে সামনেই: অনিন্দিতা

ভবিষ্যতে নিজের কাজ নিয়ে কী ভাবছ, ধরো যখন 'কে আপন কে পর' শেষ হয়ে যাবে, কোনও না কোনও দিন তো সেটা হবে, তার পরে। তুমি কি কখনও পরিচালনা বা প্রযোজনার দিকে যাবে?

প্রযোজক হতে গেলে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন সেটা তো তুমি জানো। তাই ওটা সহজ নয়। কিছু ভাবনা আছে, মাথায় চলতে থাকে। নিজেই মাঠে নামতে হবে, নিজেকেই ভাবতে হবে, কেউ নেই যে তোমাকে কিছু করে দেবে। ইচ্ছে আছে নিজের সঞ্চয় থেকেই কিছু শর্ট ফিল্ম করার। নাহলে একটা আক্ষেপ থেকে যাবে। কিন্তু আমার মনে হয় এই প্রজেক্টটা যখন শেষ হবে, তার পরে এসব নিয়ে এগোনো উচিত। একদিন স্বপ্ন দেখেছিলাম যে স্টার জলসা-য় কাজ করব, সেই স্বপ্নটা তো সত্যি হয়েছে। আর আমার সঙ্গে অনেকগুলো জীবন জুড়ে রয়েছে। তাই ভবিষ্যতের পদক্ষেপগুলো ভেবেচিন্তে নিতে হবে।

Bengali Serial Bengali Actor Bengali Television TV Actor
Advertisment