অন্যান্য বহু প্রেমের মতই ইকরা জিওয়ানি এবং মুলায়ম সিং যাদবের প্রেমের গল্পটা সাদামাটা এবং অপ্রত্যাশিতভাবেই শুরু হয়েছিল। সময়টা ছিল ২০১৯। মাল্টিপ্লেয়ার লুডো সেশনের মধ্যে দিয়ে এই প্রেমের শুরু। তারপর থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভার্চুয়াল লুডো খেলা। দুই পার্টনার, যাঁদের একজন বসে পাকিস্তানের হায়দরাবাদে। অন্যজন বেঙ্গালুরুর হোসুর-সরজাপুর রোডের ফার্মে নিরাপত্তারক্ষী। লুডো খেলার সূত্রেই তাঁদের প্রেমে জড়িয়ে পড়া।
তারপর থেকেই পরস্পরের প্রতি বাড়তে থাকে আবেগ। দশম শ্রেণি পাস নিরাপত্তারক্ষী আর স্নাতক পাঠরত ছাত্রী। যে ছাত্রী আবার নিজের শহরে ঘরোয়া। তাঁদের প্রেমের সঙ্গেই বেড়েছিল পরস্পরের থেকে দূরে থাকার যন্ত্রণা। চার বছরের সেই বিরহ ঘোচাতে বা এক হতে তাঁরা কাঁটাতার উপেক্ষা করে পালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু, বলিউডের চিত্রনাট্যকে হার মানানো এই প্রেমকাহিনি বাস্তবের কঠিন দেওয়ালে ধাক্কা খেল ২০২৩-এ।
এই দু'জনের প্রেম নজর এড়ায়নি গোয়েন্দাদের। তাঁদের থেকে তথ্য পায় বেঙ্গালুরু পুলিশ। আর, তারপরই পুলিশ আধিকারিকরা হোয়াটসঅ্যাপ কলের মাধ্যমে চলতে থাকা এই প্রেমের ব্যাপারে ইকরা জিওয়ানির মা-বাবাকে সতর্ক করে। ২৩ জানুয়ারি ইকরাকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করা, বেঙ্গালুরু শহরে বসবাস করা, জাল পরিচয়পত্র তৈরির দায়ে গ্রেফতার করা হয়। আর, মুলায়ম সিং যাদবকে একজন পাকিস্তানি নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন- জুনেইদ-নাসিরকে পুড়িয়ে খুনে অভিযুক্ত তিন গোরক্ষক হরিয়ানা পুলিশের চর, বিস্ফোরক তথ্যে তোলপাড়
রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ইকরাকে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে অভিবাসন আধিকারিকদের হাতে হস্তান্তর করা হয়। তুলে দেওয়া হয় পাকিস্তানের হাতে। বেঙ্গালুরু হোয়াইটফিল্ডের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এস গিরীশ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, রবিবারই ইকরাকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর আগে মাসখানেক বেঙ্গালুরুর মহিলা হোমে ছিলেন ইকরা। হোমে যাঁদের সঙ্গেই তাঁর কথা হয়েছে, তাঁদেরকেই ইকরা বলেছেন, 'আমি আমার বাকি জীবনটা ভারতে স্বামীর কাছেই থাকতে চাই। দয়া করে আমাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠাবেন না। দয়া করে আমাকে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে দিন।'