বুধবার রাতে বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হল বিহারের বক্সার জেলা। রাত ৯টা ৩৫ নাগাদ দানাপুর ডিভিশনের রঘুনাথপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়েছে দিল্লির আনন্দ বিহার থেকে অসমের কামাখ্যাগামী ১২৫০৬ নর্থ-ইস্ট সুপারফাস্ট ট্রেন। ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এমনকী, কামরা পাশের চাষের জমিতে গিয়েও পড়েছে বলেই বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই দানাপুরের ডিআরএম ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন। চলছে উদ্ধারকাজ।
পাশাপাশি, রেলের তরফে বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছে। নম্বরগুলো হল, পাটনা হেল্পলাইন- ৯৭৭১৪৪৯৯৭১, দানাপুর হেল্পলাইন- ৮৯০৫৬৯৭৪৯৩। এছাড়াও চালু হয়েছে আরও দুটি হেল্পলাইন নম্বর। নম্বরগুলো হল কমার্শিয়াল হেল্পলাইন ৭৭৫৯০৭০০০৪ এবং আরা হেল্পলাইন ৮৩০৬১৮২৫৪২। এছাড়াও চালু করা হয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি হেল্পলাইন- ৮১৭০০৩৪২৪২ আর গুয়াহাটি হেল্পলাইন- ০৩৬১২৭৩১৬২১।
পাটনার তিনটি প্রধান হাসপাতাল- পাটনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, নালন্দা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুল্যান্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।
বক্সার পুলিশ জানিয়েছে যে ট্রেনটি বক্সার স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পরে এবং বক্সার স্টেশন থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে রঘুনাথপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাছে পৌঁছানোর পরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রেনের ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়, বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। যার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
রেলওয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ চলছে কিন্তু অন্ধকারের জন্য উদ্ধারকাজে বিশেষ অসুবিধা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে সিঁড়ির সাহায্যে কয়েকজন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী তেজস্বীপ্রসাদ যাদব বলেন, 'আমরা উদ্ধার অভিযান জোরদার করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য বিভাগ আর বক্সার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা আহতদের চিকিৎসার জন্য পাটনার হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রেখেছি।' দুর্ঘটনার জেরে ওই পথ দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েকটি ট্রেনকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে একটি পোস্টে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বক্সারের সাংসদ অশ্বিনীকুমার চৌবে বলেছেন, 'আমি জানতে পেরেছি যে কয়েকটি কোচ লাইনচ্যুত হয়েছে। আমি ডিজি এনডিআরএফ, মুখ্যসচিব, ডিএম, ডিজি এবং জিএম রেলওয়ের সাথেও কথা বলেছি। আমি আমাদের কর্মীদের কাছে আবেদন করেছি এবং তারা উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন। মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে।'
বুধবার রাতের এই ট্রেন দুর্ঘটনা ওড়িশার বালাসোরে একসঙ্গে তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনার প্রায় চার মাস পরে ঘটল। ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৯৬ জন মারা যান। বালাসোর জেলার বাহানাগা বাজার রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। সেই সময় চেন্নাইগামী করোমণ্ডল এক্সপ্রেস একটি দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের পিছনে ধাক্কা মেরেছিল এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি তাতে লাইনচ্যুত হয়। এর কয়েক মিনিট পরেই হাওড়া যাওয়ার পথে যশবন্তপুর এক্সপ্রেস ওই লাইনচ্যুত বগিতে ধাক্কা খেয়ে লাইনচ্যুত হয়েছিল।