যাবজ্জীবন সাজা হলো প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সজ্জন কুমারের। আজ ১৯৮৪-তে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যার পর শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় কুমারের ভূমিকার প্রেক্ষিতে এই সাজা শোনাল দিল্লি হাই কোর্ট। এর আগে ২০১৩ সালে এই মামলার ভারপ্রাপ্ত ট্রায়াল কোর্ট বেকসুর খালাস করে দেয় বর্তমানে ৭৩ বছর বয়সী এই নেতাকে।
হাই কোর্ট তাঁকে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হিংসা ছড়ানো, এবং জনগণের সম্পত্তি বিনষ্ট করার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে আদেশ জারি করেছে, তিনি যেন ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণ করেন। পাশাপাশি তাঁকে এক লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছে আদালত।
ট্রায়াল কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সিবিআই, দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক নাগরিক, এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের আপিলের ভিত্তিতে বিচারপতি এস মুরলিধর ও বিচারপতি বিনোদ গোয়েলের ডিভিশন বেঞ্চের সামনে শুনানি শেষ হয় ২৯ অক্টোবর, যার পর দুই বিচারপতি রায় মুলতুবি রাখেন। আজ হাই কোর্টের রায়ে এও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, যে সজ্জন কুমার আক্ষরিক অর্থেই তাঁর বাকি জীবন জেলে কাটাবেন।
আরও পড়ুন: বুলন্দশহর কাণ্ডে বিজেপি, বজরং দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নোটিস
প্রধান মামলাটি ছিল দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের রাজ নগর এলাকায় ১ নভেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে একটি শিখ পরিবারের পাঁচজন সদস্যের হত্যা সংক্রান্ত। সজ্জন কুমার ছাড়াও এই মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ট্রায়াল কোর্ট দোষী সাব্যস্ত করে প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর বলবান খোখর, অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা আধিকারিক ক্যাপ্টেন ভাগমল, গিরিধারী লাল, ও আরও দুই ব্যক্তিকে। এঁদের সাজা বজায় রেখেছে হাই কোর্ট।
সজ্জন কুমারকে খালাস করে দিলেও ট্রায়াল কোর্ট খোখর, ভাগমল, এবং লালকে যাবজ্জীবন দেয়। এছাড়াও তিন বছরের জেল হয় দুই প্রাক্তন বিধায়ক মহেন্দ্র যাদব ও কিষণ খোখরের। দোষীরা ২০১৩ সালের মে মাসে ট্রায়াল কোর্টের জারি করা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-ও কুমারের বেকসুর খালাস হওয়ার বিরুদ্ধে আপিল করে জানায়, কুমার এবং অন্যান্যরা "পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা" এবং "ধর্মীয় শুদ্ধিকরণের নামে শিখহত্যায়" লিপ্ত ছিলেন।
গত বছর অর্থাৎ ২০১৭-র ২৯ মার্চ হাই কোর্টের তরফে শো কজ নোটিস জারি করা হয় ১১ জন পূর্বে খালাস পাওয়া অভিযুক্তকে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন যাদব ও খােখর। এই নোটিসের কারণ ছিল পাঁচটি দাঙ্গার মামলা, যেগুলি এর আগে তামাদি করে দেওয়া হয়। এই মামলাগুলির শুনানি চলছে আরেকটি ডিভিশন বেঞ্চের সামনে। অভিযুক্তদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যে "মানবিকতার বিরুদ্ধে ভয়াবহ অপরাধের" অভিযোগে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পুনরায় তদন্ত এবং মামলা করা হবে না।