ভারত সরকার ১৯৬০ সালের সেপ্টেম্বরের সিন্ধু জল চুক্তি (IWT) সংশোধনের জন্য প্রতিবেশি পাকিস্তানকে একটি নোটিস জারি করেছে। সরকার বলেছে, 'পাকিস্তানের একাধিক ভুল পদক্ষেপের ফলেই ‘সিন্ধু জল চুক্তি’ বাস্তবায়নের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে এবং এই চ্যুক্তি সংশোধনের জন্য নোটিস জারি করতে বাধ্য হয়েছে ভারত সরকার । সিন্ধু জল চুক্তি হওয়ার পর জল বণ্টনে ভারত বরাবরই নরম মনোভাব দেখিয়ে এসেছে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্ততায় ১৯৬০ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের সঙ্গে সিন্ধু নদের জল ব্যবহার নিয়ে চুক্তি হয়। স্বাধীনতার পর থেকেই এই সিন্ধু নদের জল ব্যবহার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে টানাপোড়েন চলছে। টানা ৬ বছর ধরে আলাপ আলোচনার পর ১৯৬০ সালে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। নেহরু পাকিস্তানে গিয়ে করাচিতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত করেন।
সূত্রের খবর অনুসারে, পাকিস্তানের কার্যকলাপে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করার সময়, ভারত সরকার আরও বলেছে যে ভারত অক্ষরে অক্ষরে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি বাস্তবায়নে নমনীয় মনোভাব দেখিয়ে আসছে। কিন্তু পাকিস্তানের দিক থেকে কোন সাহায্য পায়নি ভারত। ভারত সরকার বলেছে যে ‘ভারত পারস্পরিকভাবে সিন্ধু জল চ্যুক্তিতে একটি মধ্যস্থতার পথ খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, পাকিস্তান ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের ৫টি বৈঠকের সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে অস্বীকার করেছে। এই কারণেই এখন পাকিস্তানকে নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
নোটিসের উদ্দেশ্য
এই নোটিসের উদ্দেশ্য হল সিন্ধু জল চুক্তি লঙ্ঘন সংশোধন করার জন্য পাকিস্তানকে ৯০ দিনের মধ্যে আন্তঃসরকারি আলোচনায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়া। এই প্রক্রিয়াটি গত ৬২ বছরে পরিস্থিতির পরিবর্তন অনুসারে সিন্ধু জল চুক্তি সংশোধণ করবে। ভারত ও পাকিস্তান ৯ বছরের আলোচনার পর ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিন্ধু জল চুক্তি স্বাক্ষর করে, যেখানে বিশ্বব্যাংকও মধ্যস্থতাকারী হিসাবে অংশ নেয়। পাকিস্তানের তরফে এই চুক্তির নিয়ম-কানুনকে ক্রমাগত উপেক্ষা করার পর এই বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।