কাঠুয়া গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের বার বার আবেদনের শুনানির জেরে স্থগিত হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিতিবিরক্ত পাঞ্জাব- হরিয়ানা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়ে চিয়েছে, এর পর এই মামলায় আর কোনও মুলতুবি করা হবে না। আদালত জানিয়ে দিয়েছে ১১ ফেব্রুয়ারি যদি কোনও পক্ষের আইনজীবী হাজির না থাকেন, তাহলে আদালতবান্ধব নিয়োগ করতে কোনও দ্বিধা করবে না তারা। ১১ ফেব্রুয়ারি পরের শুনানির দিন।
বিচারপতি রাজীব শর্মা ও হরিন্দর সিং সাধুকে নিয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে, "স্পষ্ট জানানো হচ্ছে, শুনানির পর দিন কোনও মুলতুবির আবেদন গ্রাহ্য করা হবে না। যদি ওই দিন কোনও আইনজীবী উপস্থিত না থাকেন, তাহলে আদালতবান্ধব হিসেবে কোনও আইনজীবীকে নিযুক্ত করার ব্যাপারে কোনও রকম দ্বিধা করবে না আদালত।"
অভিযুক্ত তিলক রাজের শাস্তি মুলতুবি রাখার জন্য যে আবেদন তার শুনানি ছিল মঙ্গলবার। এ মামলায় জম্মু কাশ্মীর সরকারের আইনজীবী আর এস চিমা ও আর্ষদীপ সিং চিমা এবং তিলক রাজের আইনজীবী ডক্টর তনুবীর শুনানির সময়ে উপস্থিত ছিলেন বলে নির্দেশ থেকে জানা গিয়েছে।
মুলতুবি নিয়ে আদালত কেন বিরক্ত সে নিয়ে কোনও কারণ নথিবদ্ধ না করা হলেও, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আদালতে উপস্থিত এক সিনিয়র আইনজীবী জানান, আদালত দোষীদের আবেদন নিয়ে সওয়াল শোনার জন্য প্রস্তুত থাকলেও, সব আইনজীবীরা হাজির ছিলেন না। বিচারপতি রাজীব শর্মার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে খ্যাত।
গত বছর ১০ জুন তিন মূল অপরাধী- সানজি রাম, পরবেশ কুমার ও দীপক খুজেরিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় পাঠানকোট আদালত। তিন প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক, সাব ইনস্পেক্টর আনন্দ দত্ত, স্পেশাল পুলিশ অফিসার সুরিন্দর কুমার ও হেড কনস্টেবল তিলক রাজকে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের একটি বিশেষ তদন্ত দল তাদের তদন্তে জানায়, কাঠুয়ার রসানা গ্রামে বকরেওয়াল সম্প্রদায়কে গ্রাম থেকে সরানোর চক্রান্তের অংশ হিসেবে ৮ বছরের শিশুকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে হত্যা ও ধর্ষণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই মামলা হয় পাঠানকোট জেলা ও দায়রা আদালতে। ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে চণ্ডীগড় হাইকোর্টে অপরাধীদের আবেদন মুলতুবি রয়েছে।
জম্মু কাশ্মীর সরকার তিন মূল অপরাধীর মৃত্যুদণ্ডের জন্য আবেদন করেছে। তাদের বক্তব্য এ মামলা দুর্লভের মধ্যে দুর্লভতম, এবং এক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডই যথার্থ। অন্য দুটি আবেদনে সরকার একমাত্র খালাস পাওয়া অভিযুক্ত বিশাল জনগোত্রার শাস্তি চেয়েছে এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে অভিযুক্ত তিন পুলিশ আধিকারিককে খালাস দেওয়ার নির্দেশ প্রত্যাহার করতে বলেছে।