উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ১৮ বছর বয়সি এক নার্সের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। ঘটনায় এক বেসরকারি হাসপাতালের মালিক এবং অন্য তিনজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ এবং হত্যার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে, এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। উন্নাওয়ের পুলিস সুপারের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, মৃত নার্সের পরিবার একটি এফআইআর দায়ের করেছে। এফআইআরে বলা হয়েছে, ওই নার্স শুক্রবার হাসপাতালে কাজে যোগ দিয়েছিল এবং শনিবার সকালে তাঁর দেহ নার্সিংহোমের একটি পিলার থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, মেয়েটিকে হত্যার আগে হাসপাতালের মালিক এবং অন্য তিন জন গণধর্ষণ করেছিল। পরে, এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা হিসাবে দেখানোর জন্য তাঁর লাশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উত্তরপ্রদেশে গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। অতীতে বারবার এমন অভিযোগ সামনে এসেছে। তারমধ্যে এই উন্নাওয়েই গণধর্ষণ এবং খুনের একটি ঘটনা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। যোগী আদিত্যনাথ প্রথমবার উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দু'মাসে ৮০৩টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে যোগী সরকারের বয়স যখন চার মাস, সেই সময় উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই সত্যিটা কবুল করে ফেলেছিলেন উত্তরপ্রদেশের পরিষদীয় মন্ত্রী সুরেশকুমার খন্না।
আরও পড়ুন- মোহালি থেকে গ্রেফতার পাতিয়ালা সংঘর্ষের ‘মাস্টারমাইন্ড’
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর পরিসংখ্যান বলছে, যোগীর পূর্বসূরি অখিলেশ যাদবের মুখ্যমন্ত্রিত্বের শেষ পর্বে ২০১৬-র এপ্রিল থেকে ২০১৭-র জানুয়ারি পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশে ২,৯৪৩টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল। প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর যোগী জমানায় প্রথম ১০ মাসেই (২০১৭-র এপ্রিল থেকে ২০১৮-র জানুয়ারি) তা ২৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৩,৭০৪টি। পরবর্তী বছরগুলিতে জনসংখ্যার নিরিখে দেশের বৃহত্তম রাজ্যে ধর্ষণ-সহ যৌন হেনস্থার ঘটনা বেড়েছিল লাফিয়ে। সাধারণ দুষ্কৃতীদের পাশাপাশি অভিযুক্তদের তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন শাসক দলের নেতা, বিধায়ক এমনকী অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও! সম্প্রতি ফের উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় ফিরেছেন যোগী আদিত্যনাথ। আর, যোগীর ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের সঙ্গেই নারী নির্যাতনের সংখ্যাও উত্তরপ্রদেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বলেই অভিযোগ করেছেন বিরোধী দল সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব।
Read story in English