গত কয়েক মাস ধরেই বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। স্বাভাবিকের পথে জীবনযাপন। শিথিল হয়েছে করোনা বিধি। কিন্তু, এতে স্বস্তির কিছু নেই। উল্টে, চিন সহ দুনিয়াজুড়ে বে কয়েকটি দেশে সংক্রমণ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। যা ঘিরেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকে। চলতি মাসের ৭ থেকে ১৩ মার্চের মধ্যে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটির বেশি। যা আগের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ বেশি। দক্ষিণ কোরিয়ায় সংক্রমিতের সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়েছে ইতিমধ্যেই। ফের করোনার চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে ভারতেও এমন সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, কানপুরের একদল বিজ্ঞানী এর আগে একটি গাণিতিক মডেলের সাহায্যে দেখিয়েছিলেন চলতি বছরের অগাস্টেই ভারতে আছড়ে পড়তে পারে চতুর্থ ঢেউ। এবার সেই ভবিষ্যতবাণীর ওপর ভিত্তি করে আগাম সতর্কতার বলেছেন সুধাকর। তিনি বলেন, "মহামারী শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোভিড বিধি মেনে চলা উচিত"।
এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র প্রদান ট্রেডস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, ‘কিছু দেশে নমুনা পরীক্ষা কমানো সত্ত্বেও এই বৃদ্ধি ঘটছে, যার অর্থ ঘটনাগুলি বরফের চূড়া মাত্র।’বিশ্বের একাধিক দেশকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে। গত এক সপ্তাহে তা ফের হুড়মুড় করে বাড়তে শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে ওমিক্রনের (Omicron) অতি সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট বিএ.১ এবং বিএ.২। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্তার বক্তব্য, “বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে বাড়াবাড়ি সংক্রমণ শুরু হয়েছে, একইসঙ্গে পর্যাপ্ত কোভিড পরীক্ষাও হচ্ছে না। অর্থাৎ, যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি মহামারীর প্রকৃত অবস্থা তারচেয়েও ভয়াবহ'।
আরো পড়ুন : ফের দাম বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের, গত ৪ দিনে এই নিয়ে ৩ বার
ইতিমধ্যেই ওমিক্রন তার দাপট দেখাতে শুরু করেছে ইউরোপের একাধিক দেশে। ইতিমধ্যেই অনেক দেশ সংক্রমণ কম হওয়ার কারণে বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। আর সেই সুযোগেই ওমিক্রন বিস্তার লাভ করেছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরবর্তী ঢেউ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখাকালীন সময়ে কে সুধাকর বলেন, “ ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে তিনটি ঢেউ মোকাবিলা করার মত অভিজ্ঞতা রয়েছে। কোনও ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত। সেই সঙ্গে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সীদের টিকাদান, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের বুস্টার ডোজ করোনা মোকাবিলায় যথেষ্ট সাহায্য করবে" বলেই মনে করে তিনি।
সরকার কঠোর ব্যবস্থা পুনর্বহাল করবে কিনা সে বিষয়ে সুধাকর বলেন, "WHO ঘোষণা না করা পর্যন্ত কোভিড-উপযুক্ত আচরণ বজায় রাখা উচিত। আমরা বর্তমান পরিস্থিতি বোঝার জন্য উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে একটি আলোচনা করব”। অন্যদিকে ক্লিনিকাল বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডাঃ সিএন মঞ্জুনাথ বলেছেন, "জুলাই অগাস্টে যে ঢেউয়ের কথা বলা হয়েছে তার তীব্রতা সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই তাই আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে। আন্তর্জাতিক যাত্রীদের নজরদারি বাড়াতে হবে।সেই সঙ্গে তিনি বলেন, দেশের মোট ৯০ শতাংশ মানুষ ইতিমধ্যেই টিকা পেয়েছেন বাকীদেরও টিকাদানের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে”।
Read story in English