রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আগামী সপ্তাহেই উজবেকিস্তানে এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হবেন। বুধবার রাশিয়ার এক শীর্ষ আধিকারিক এমনটাই জানিয়েছেন। চিনে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই ডেনিসভ নামে ওই শীর্ষ আধিকারিক সাংবাদিকদের বলেন, 'দুই নেতা উজবেকিস্তানের সমরখন্দে ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে বৈঠক করবেন।
রাশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসকে উদ্ধৃত করে ডেনিসভ বলেন, 'আজ থেকে ১০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে সমরখন্দে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে আমাদের নেতাদের আরেকটি বৈঠক হবে। আমরা সক্রিয়ভাবে সেই বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছি।' এই বৈঠক যদি আরেকটু পিছিয়ে যায়, তাহলে বলতে হয়, আগামী আড়াই বছর পর ফের বিদেশ সফর করতে চলেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট।
রাশিয়ার গণমাধ্যম অবশ্য উজবেকিস্তানে শীর্ষ সম্মেলনের আগে শি জিনপিঙের কাজাখস্তান সফরের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছে। তবে, এই নিয়ে এখনও সরকারিস্তরে চিন কিছুই জানায়নি। তারমধ্যেই জিনপিঙের উজবেকিস্তান সফর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, চিনের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মাও নিং বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, "আপনার প্রশ্নে, আমার কিছু বলার নেই।" ক্রেমলিন ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর কয়েক সপ্তাহ আগে ফেব্রুয়ারিতে বেইজিংয়ে পুতিন ও শি শেষ বৈঠক করেছিলেন।
দুই প্রেসিডেন্ট একটি চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, দুই রাষ্ট্রই পরস্পরকে সবচেয়ে সুবিধাভোগী হিসেবে গণ্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে, এখনও এটা অস্পষ্ট যে ইউক্রেনে মস্কোর "একটি বিশেষ সামরিক অভিযান" শুরু করা নিয়ে রুশ পরিকল্পনার কথা জিনপিং আদৌ জানতেন কি না। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘে ওঠা বিভিন্ন প্রস্তাবের সময় চিন নিজেকে নিরপেক্ষ হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছে। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার অর্থনীতিকে সমর্থন করা নিয়ে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া এড়াতে চেয়েছে।
বিভিন্ন সময় আমেরিকা ও তার সহযোগীরা অভিযোগ করেছে যে মস্কো এবং বেইজিং- এশিয়া, ইউরোপ এবং তার বাইরে উদার গণতান্ত্রিক শক্তির বিরোধিতা করছে। আর, তাদের বিদেশ নীতিকে সেভাবেই সাজাচ্ছে। দুই দেশই সীমানার ব্যাপারে কঠোরতা দেখাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের পক্ষে সুর চড়াচ্ছে। বিরোধীদের বাকস্বাধীনতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার হরণ করছে।
আরও পড়ুন- উত্তরপ্রদেশেও নয়া সমীকরণ! ১০০ বিধায়ক নিয়ে বিজেপি ছাড়লে মৌর্যই মুখ্যমন্ত্রী, আশ্বাস অখিলেশের
যদিও অতীতে মস্কো এবং বেইজিং সামরিক জোট গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু, পুতিন সম্প্রতি দাবি করেছেন যে এই ধরনের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পুতিন আরও জানিয়েছেন যে, চিনের হাতে রাশিয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল সামরিক প্রযুক্তি তুলে দিয়েছে। যা নিশ্চিতভাবে চিনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে শক্তিশালী করেছে।
শুধু তাই নয়, রাশিয়ার সেনা ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে। যা গত সপ্তাহে শুরু হয়েছিল এবং বুধবার দেশটির পূর্বে শেষ হয়েছে। এই মহড়ায় চিনের সেনাবাহিনীও যোগ দিয়েছিল। ইউক্রেন এবং তাইওয়ানে রাশিয়া এবং চিনের সামরিক অবস্থান নিয়ে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে এই নতুন ঘটনাগুলো মস্কো এবং বেইজিংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের নতুন নির্দশন গড়েছে। এমনই কিন্তু, মনে করছে আমেরিকা এবং পশ্চিমের দেশগুলো।
Read full story in English