দক্ষিণ কেরালার পাতানমিতিত্তা জেলার রানি বনাঞ্চলের গভীরে অবস্থিত নীলাক্কল। মঙ্গলবার সেখানে কাছের গ্রাম থেকে আসা মূলত আদিবাসী মহিলারা তাঁবু খাটিয়ে বসে আয়াপ্পার মন্ত্র পাঠ করছিলেন, মাঝে মাঝে ভাষণও দিচ্ছিলেন।
অন্যরা দাঁড়িয়েছিলেন রাস্তায়, সমস্ত গাড়ি আটকাচ্ছিলেন তাঁরা। সেখানে আয়াপ্পা মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এবং অন্যান্য পুরুষদের সামনে দুজন মহিলা পম্পাগামী গাড়িতে উঠে নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছিলেন যে সেখানে কোনও মহিলা আছে কিনা। পম্পা হল দীর্ঘদিনের বেস ক্যাম্প, এ বছরের বন্যায় অন্যতম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকাতেও ছিল এ জায়গা। আয়াপ্পা তীর্থযাত্রীবোঝাই একটি বাসকে যাত্রার ‘অনুমতি’ দিতে দিতে এক মহিলা বিক্ষোভকারী বললেন, ‘’পম্পাতে কোনও মহিলা যাচ্ছে না এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হয়ে নিচ্ছি। তেমন হলে আমাদের মৃতদেহের উপর দিয়ে যেতে হবে ওদের।’’
আরও পড়ুন, শবরীমালাগামী গাড়ি থামিয়ে মহিলাদের খোঁজ, বরদাস্ত নয়, জানিয়ে দিলেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী
সুপ্রিম কোর্ট শবরীমালায় সমস্ত বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার পর বুধবারই প্রথমবার খুলছে দক্ষিণ কেরালার শবরীমালা মন্দির। তার আগের দিন নীলাক্কল এবং এরুমেলি, দুটি বেস ক্যাম্পই উত্তেজনায় ফুটছিল টগবগ করে।
মালয়ালম ক্যালেন্ডারের প্রথম পাঁচদিন শবরীমালার মন্দির সমস্ত ভক্তদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া মাঝ নভেম্বরে শুরু হয় দু মাস ব্যাপী বার্ষিক উৎসব। এ মাসে মন্দির খোলার কথা বুধবার, মূল পূজা অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতি বার। নীলাক্কল এবং এরুমেলি থেকে বাসে করে নিয়ে পম্পা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে তীর্থযাত্রীদের। সেখান থেকে পাহাড়ের উপর মন্দিরে রৌঁছোনোর জন্য সাত কিলোমিটার চড়াই হাঁটতে হবে ভক্তদের।
এর আগে মঙ্গবার সকালে নীলাক্কলে টেলিভিশনের দুই মহিলা সাংবাদিককে নীলাক্কলে আটকে দেওয়া নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। ওঁরা দুজন পম্পা যাচ্ছিলেন, যে পর্যন্ত মহিলাদের যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই।
সন্ধে নাগাদ বিক্ষোভকারীরা স্থানীয় একটি গেস্ট হাউসে উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ক্ষেত্র আচার সংরক্ষণ সমিতি নামে বিক্ষোভকারী একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রসাদ কুজিকালা বললেন, ‘‘ওঁরা আমাদের গাড়ি আটকানো নিয়ে চিন্তিত। আমরা জানিয়েছি যে আমরা বলপ্রয়োগ করছি না। আমরা শুধু ভগবান আয়াপ্পা মহিলাদের সম্পর্কে কী মনে করেন, তা নিয়ে সচেতনতা প্রচার করছি। আমাদের বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ- আমরা আয়াপ্পা মন্ত্রোচ্চারণ করছি এবং প্রার্থনা করছি।’’
তবে আগামিকাল শুধু আমরাই থাকব না। কংগ্রেস, বিজেপি, শবরীমালা পুরোহিতে পরিবারের আত্মীয় রাহুল ঈশ্বর সবাই মিলে প্রতিবাদ জানাবে এবং আমরা পুলিশকে জানিয়েছি যে তখন কী হবে আমরা বলতে পারব না।’’
শবরীমালা মন্দর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ট্রাভাঙ্কোর দেভাস্বোম বোরডের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর এরুমেলি ঘিরে ফেলেছে পুলিশ।
Read Full Story in English