ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে গড়ে উঠবে তিন ত্রিভূজ সম্পন্ন অপরূপ ভাষ্কর্যের সংসদ ভবন। ভাষ্কর্যের কাজ ভারতীয় গণতন্ত্রের নির্যাসকে তুলে ধরবে। নয় নয় করে নয় দশক পার করেছে বর্তনমান সংসদ ভবনটি। এখন সেখানে স্থান সংকুলানের সমস্যার কথা প্রায়ই শোনা যায়। সে কারণেই এই নয়া পরিকল্পনা সরকারের। সংসদ ভবনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনও তৈরি করা হবে। জানা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে। গত ১৩ই সেপ্টেম্বর নগরোন্নয়নমন্ত্রকের তরফে এই প্রকল্পকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর 'স্বপ্নের প্রকল্প' বলে বর্ণনা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে গুজরাটের এইচসিপি ডিসাইন, প্ল্যানিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এই উদ্যোগ রূপায়ণের বরাতও পেয়ে গিয়েছে।
৯০ বছর আগে এডউইন লুটিয়েন ও হার্বাট বেকার নামে দুই স্থপতি বর্তমান সংসদ ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। ২০২২ সালে দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। সরকারের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, এর আগেই তৈরি হয়ে যাবে নতুন সংসদ ভবন। সেই সঙ্গে বিজয় চক থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত যে সেন্ট্রাল ভিস্টা-তার চালচিত্রও বদলে ফেলা হবে। সরকারি সচিবালয়ের সমস্ত মন্ত্রক ও অফিসগুলিকে নিয়ে আসা হবে এক ছাদের তলায়। নতুন সংসদ ভবন ও কেন্দ্রীয় সচিবালয় মিলিয়ে এমন এক সেন্ট্রাল ভিস্টা তৈরি হবে যার ঐতিহ্য আগামী কয়েকশ বছর থেকে যাবে।
বর্তমান সংসদ ভবন কি পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে?
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান সংসদ ভবনে মিউজিয়াম তৈরি হবে। এখানে ১৮৫৭ সালের আগে ও পরে ভারতের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। বর্তমান রাষ্ট্রপতি ভবন সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সেখানে ভারতীয় বৈচিত্রের নানা বিষয় প্রদর্শিত হবে। বদলে যাবে বিজয় চক থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত দীর্ঘ সেন্ট্রাল ভিস্টার রূপও। প্রয়োজনে বেশ কিছু স্থাপত্য ধ্বংস করা হবে বলে জানিয়েছেন এক সরকারি আধিকারিক।
জানা যাচ্ছে, চিরকাল লোকসভার সাংসদ সংখ্যা ৫৪৩ থাকবে না। যে ভাবে দেশের জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতে নির্বাচন কেন্দ্রের পুনর্বিণ্যাস প্রয়োজন হতে পারে। সীমানা পুনর্বিণ্যাসের ফলে লোকসভার আসন সংখ্যা বাড়াতে হতে পারে। তখন সাংসদরা বসবেন কোথায়? তা ছাড়া সংসদ ভবনে সরকারি কর্মী, অফিসারদের জন্য স্থানের অভাব রয়েছে। সাংসদদেরও বসার জন্য পৃথক চেম্বার নেই। অন্যদিকে লুটিয়েন দিল্লির কম বেশি ৪৭টি ভবনে কেন্দ্রীয় সরকারি মন্ত্রকগুলি রয়েছে। তাতেও প্রায় ৭০ হাজার কর্মী অফিসার কাজ করেন। এতটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় অনেক সময়েই অসুবিধা হয় বলে কারও কারও অভিযোগ। নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, সে কারণেই পুরো সচিবালয় এক ছাতার তলায় আনার কথা ভাবা হচ্ছে।
Read the full story in English