তাঁর পূর্বসূরি ট্রাম্প যেখানে ছেড়েছিলেন, ব্যাটনটা সেখান থেকেই ধরলেন জো বিডেন। দক্ষিণ এশিয়া তথা ভারতীয় উপমহাদেশে ভারতকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী বললেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। মোদী-বিডেন সাম্প্রতিক ফোনালাপে চিনের চোখ রাঙানি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।একই উদ্বেগ শোনা গিয়েছে বিদেশ সচিবের কণ্ঠে। মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানিয়েছেন, বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কথা হয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। ভারত বিশ্বের অন্যতম নেতৃত্বস্থানীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্লিঙ্কেন। হোয়াইট হাউসের মসনদে বসার পর ভারত নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই ওয়াশিংটনের এই মন্তব্য কূটনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এমনটাই মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এই প্রথম দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীস্তরে আলোচনা হল। মঙ্গলবার (ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে প্রাইস বলেন, ‘‘কূটনৈতিক ও নিরাপত্তার নানা বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে ব্লিঙ্কেন-জয়শঙ্করের মধ্যে। প্রতিরক্ষা, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পারস্পরিক সহযোগিতা, জঙ্গি দমন, শান্তি রক্ষা, পরিবেশ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি, কৃষি, মহাকাশ, সমুদ্রের মতো বহুবিধ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষ এবং তার জেরে নয়াদিল্লি-বেজিং টানাপড়েনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাইডেন অবশ্য সে পথে হাঁটেননি। তবে প্রাইস বলেছেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছি। দু’দেশের মধ্যে যে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে সে সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। সরাসরি আলোচনা এবং তার মাধ্যমে সীমান্ত বিতর্কের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রক্রিয়াকে আমরা সমর্থন করি।” প্রতিবেশীদের ভয় দেখানোর জন্য চিনের কূটনৈতিক কৌশল নিয়ে আমেরিকা যে উদ্বিগ্ন, সে কথাও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন প্রাইস।
জয়শঙ্কর-ব্লিঙ্কেন বার্তালাপের উল্লেখ করে প্রাইস আরও বলেছেন, ‘ইন্দো-মার্কিন কৌশলগত বোঝাপড়া বহুমুখী। সেই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে আমরা সব রকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব। আমরা নিশ্চিত, যে ভাবে দু’দেশের সম্পর্ক অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে, তার ধারা ভবিষ্যতে বজায় থাকবে।’
সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটনের প্রাধান্যের বিষয় নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত বোঝাপড়া আরও বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি কাজ করবে বলেও টুইট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রাইস বলেন, ‘‘ভারতীয় উপমহাসাগরীয় অঞ্চলে নয়াদিল্লি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। ভারত বিশ্বের নেতৃত্বস্থানীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসা এবং ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ভারতের পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই।’’