Advertisment

‘মমতা পারছেন না, তাই তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত কিশোর’, বিস্ফোরক মুকুল

‘‘সভাপতি মমতাদেবী বলছেন পারছি না, তাই ওঁর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। দলের এত দৈন্যদশা হয়েছে যে, বেচে দিতে হয়েছে প্রশান্ত কিশোর নামে এক বাণিজ্যিক সংস্থার কাছে’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mukul roy, pk, mamata, মুকুল রায়, প্রশান্ত কিশোর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মুকুল রায়, প্রশান্ত কিশোর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

‘‘তৃণমূল দলের সভাপতির নাম কী?’’ প্রশ্নকর্তাই উত্তর দিয়ে বললেন ‘প্রশান্ত কিশোর’। এভাবেই এবার তৃণমূলের নবনিযুক্ত নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন তাঁরই একসময়ের 'দক্ষিণ হস্ত' মুকুল রায়। লোকসভা নির্বাচনে দলের ‘খারাপ রেজাল্ট’ ঝেড়ে ফেলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ‘ভাল ফল’ করতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। আর সে জন্যই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে প্রশান্ত কিশোরকে। যত দিন গড়াচ্ছে, পিকের উপর ততই ভরসা বাড়াচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এই প্রেক্ষাপটে এবার প্রশান্ত কিশোরকে নিশানা করে মমতাকে মুকুলের এহেন আক্রমণ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

Advertisment

আরও পড়ুন: ‘মুকুল রায় তৃণমূলের হয়ে কাজ করছেন’, তীর্যক মন্তব্য অভিষেকের

প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে ঠিক কী বলেছেন মুকুল রায়?

একদা তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল বলেছেন, ‘‘দলের জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক সাধারণত দলের সভাপতি বা সম্পাদক বা নির্দিষ্ট পদাধিকারীরা করেন। শুনেছি ওকে (প্রশান্ত কিশোর) সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন (পড়ুন, প্রশান্ত কিশোর), অথচ দলের সভাপতি, জেনারেল সেক্রাটেরারি নন উনি। সভাপতি মমতাদেবী বলছেন পারছি না, তাই ওঁর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। দলের এত দৈন্যদশা হয়েছে যে, বেচে দিতে হয়েছে প্রশান্ত কিশোর নামে এক বাণিজ্যিক সংস্থার কাছে’’। এরপরই মুকুলের কটাক্ষ, ‘‘উপদেষ্টা না কি পদাধিকারী? বিনা পারিশ্রমিকে করছেন? না কি পারিশ্রমিক নিচ্ছেন? কর্পোরেট হাউস হয়ে গেছে...তৃণমূল দলটা এখন একটা কোম্পানি’’। এর আগে তৃণমূলের ‘মীরজাফর’ সব্যসাচী দত্তও প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘‘কোথা থেকে পেমেন্ট পাচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর?’’

আরও পড়ুন: প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক সেরে বিধায়কদের দাওয়াই মমতার

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই বৈঠকের আগে তৃণমূল ভবনে পিকের সঙ্গে একান্তে কথা বলেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পিকের পরামর্শ মেনেই সেদিনের বৈঠকে বিধায়কদের একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেন দলনেত্রী, এমনটাই খবর। এর ক’দিন বাদেই কালীঘাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বিশেষ বৈঠকে বসেন প্রশান্ত কিশোর। সেই বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতিরা। মমতা ছাড়াই সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের একগুচ্ছ পরামর্শ দেন নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট। জেলা সভাপতিদের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সেই বৈঠক নিয়ে জোর চর্চা চলে বঙ্গ রাজনীতিতে। এর আগেও জেলায় তৃণমূলের একটি বৈঠকে প্রশান্ত কিশোরের উপস্থিতি চোখে পড়েছে। অন্যদিকে, পিকের পরামর্শ মেনেই জনপ্রতিনিধিদের কাটমানি ফেরানোর কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনটা মনে করে রাজনীতির কারবারিদের একটা বড় অংশ। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলের ‘চালিকাশক্তি’ হয়ে উঠছেন প্রশান্ত কিশোর। সেই প্রেক্ষিতে মুকুল রায়ের এই বক্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ বলে মনে করা হচ্ছে। আবার, সব্যসাচী-তৃণমূল বিবাদ পর্বে মুকুল ‘ছোট ভাই’ সব্যসাচীকে পরামর্শ দিতে যান। আর এরপরই দলের তরফ থেকে ‘বেইমান’ বিশেষণে ভূষিত হন সব্যসাচী। সেসময় সব্যসাচী বলেছিলেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোরের থেকে পরামর্শ নেওয়াটা সৎ, আর মুকুল রায়ের থেকে পরামর্শ নেওয়াটা বেইমানি! তাই তো? ভাল’’।  মনে করা হচ্ছে, এদিনের বক্তব্যের মাধ্যমে মুকুল ওই প্রসঙ্গেও তৃণমূলকে বিঁধলেন।

Mamata Banerjee mukul roy
Advertisment