কাঁথির হাইভোল্টেজ সভার আগে বাড়ি বাড়ি ঘুরলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে শুনলেন অভাব-অভিযোগ। শনিবার অধিকারী পরিবারের গড় কাঁথিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা ঘিরে উত্তেজনা চরমে ছিল। আর, এদিনই অভিষেকর গড়, অর্থাৎ তিনি যেখানকার সাংসদ সেই ডায়মন্ড হারবারে পালটা সভা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে সভায় যাওয়ার আগে অভিষেকের মধ্যে দেখা গেল তাঁর পিসি তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝলক।
সভায় যাওয়ার পথে তিনি গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন। সোজা চলে গেলেন এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগের খবর পেলেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও দেখা গেল এভাবে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ডকে সামনে পেয়ে বেজায় খুশি। হাতে চাঁদ পাওয়ার মতই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে ঘরে ডেকে নিলেন। নিজেদের সমস্যার কথা বললেন। কাগজপত্র-সহ অন্যান্য নথি দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কেন তাঁরা সমস্যায় ভুগছেন। তাঁদের কী সমস্যা হচ্ছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা কাগজ দেখিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তাঁরা হয়রানির শিকার। তাঁর কাগজপত্রে ভুল রয়েছে। সেই ভুল সংশোধনের আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। ভুল সংশোধন হয়নি। এটা মারিচদা পাঁচ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের ঘটনা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রশ্ন করেন, 'গ্রামপ্রধান, উপপ্রধানকে জানাননি কেন?' জবাবে ওই বাসিন্দা জানান, জানিয়েছিলেন কোনও লাভ হয়নি।
আরও পড়ুন- অভিষেকের সভার আগের রাতে বিস্ফোরণে উড়ল তৃণমূল নেতার বাড়ি, ঝলসে মৃত নেতা-সহ ৩
অভিষেকের এই গ্রাম সফর নিয়ে যথারীতি তাঁকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। এই ব্যাপারে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রথীন্দ্র বোস টুইট করেছেন, 'যুবরাজ ভেবেছিলেন তাকে দেখে মানুষ তার চরণে পড়বে। উল্টে মানুষ তাকে বললেন, "ঘর, বাড়ি, জল, কাজ কিছুই নেই"। শোনো তৃণমূল, ভেবোনা মানুষ চিরকাল চুপ করে থাকবে। কিছুদিন আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ধরে মানুষ একই অভিযোগ করেছিল। সময় আছে, শুধরে যাও।'
এরপর কাঁথির সভায় চলে যান অভিষেক। সেখানে গিয়ে তিনি সভামঞ্চ থেকে প্রসঙ্গটির অবতারণা করেন। অভিষেক বলেন, 'সব মিলিয়ে ১০টা বাড়িতে ঘুরে দেখলাম। ওই অঞ্চল মারিচদা পাঁচ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত। বেশিরভাগই তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রধানের নাম ঝুনুরাণি মণ্ডল। উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল। অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্র। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমি প্রধান, উপপ্রধানের পদত্যাগ চাই। একটা ত্রিপল চাইতে গেলে যদি পাঁচবার পঞ্চায়েত অফিসে যেতে হয়, তাহলে প্রধান, উপপ্রধান আর অঞ্চল সভাপতি থেকে লাভ কী!'