Advertisment

তিনবারের প্রধান ও পাঁচবারের সদস্য, নেই বাড়ি-গাড়ি, ভোটে এবারও সাফল্যে প্রত্যয়ী তিনি

পঞ্চায়েতের লড়াইয়ে এবারও সাফল্য মেলার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি ও তাঁর দল।

IE Bangla Web Desk এবং Joyprakash Das
New Update
gautam majumder has become the cpm candidate for panchayat polls from memari

এবারেও জেতার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী এই প্রার্থী।

গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান মায় সদস্যদের বাড়ি, গাড়ি, ঠাট-বাট দেখলে এখন আর কেউ চমকে যান না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক এমন দৃশ্য দেখে সাধারণ মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। রাজ্যে গ্রাম সংসদের সদস্য হওয়ার জন্য রক্ত ঝরছে। কিন্তু এমনও মানুষ রয়েছেন যিনি তিন বারের প্রধান, তাছাড়া আরও দু'বারের সদস্য। কিন্তু তাঁর না আছে নিজের বাড়ি, না আছে গাড়ি। আছে শুধু ভাঙা সাইকেল।  অন্যের জমি ঠিকে নিয়ে চাষ করে কোনওরকমে দিন গুজরান করেন। এবার তিনি প্রার্থী হয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতিতে।

Advertisment

গৌতম মজুমদার। বয়স প্রায় ৬০। বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারির চোটখণ্ড গ্রামে। মেমারি ১ ব্লকের দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তিনি ১৯৮৮ সালে প্রথম সদস্য হন। তখন থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত দুটো টার্মে সদস্য ছিলেন। তারপর ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন গৌতম মজুমদার। তারপরেও তিনি একান্তই নিঃস্ব।

কেন এমন পরিস্থিতি? গৌতম মজুমদার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'আমার তেমন কিছুই নেই। মানুষের পয়সা ব্যবহার করলে করা যেত। কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়। ওই মানসিকতা ছিল না। মার্কসের দর্শনে বিশ্বাসী। আমি তিন-চার বিঘে জমি ঠিকে নিয়ে ধান চাষ করি। তাছাড়া মামাদের ছত্রছায়ায় ছিলাম। যাই হোক করে চলে গিয়েছে। তবে আমার মতো সংখ্যাও কিন্তু কম নেই। আমার সময়কার অনেকেই এখনও দু'বেলা ভাল করে খেতে পায় না। মেমারি এক ব্লকে অনেক এসটি প্রধান ছিলেন যাঁরা এখন ক্ষেতমজুরের কাজ করে। লোকের বাড়িতে খায়।'

আরও পড়ুন- ‘৫ লাখ টাকায় বিক্রি হন শুভেন্দু’, বিরোধী দলনেতাকে চরম কটাক্ষ অভিষেকের

আপনার বাড়ি? গৌতমবাবু বলেন, 'পুরনো বাড়িতে একটি ঘর আমাকে মামা থাকতে দিয়েছেন। নিজের কোনও বাড়ি নেই। আমি মামার বাড়িতেই মানুষ।' ইটাচনা কলেজ থেকে ১৯৮৬-৮৭-তে স্নাতক গৌতমবাবু। তাঁর পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ও ছেলে। ২০২১-এ ছেলে স্নাতক হয়। এখন বর্ধমানে একটা কম্পিউটার সেন্টারে কাজ শিখছে। গৌতমবাবু জানান, ১৯৮৮-তে পঞ্চায়েত সদস্যদের মাসে ৫ টাকা ভাতা ছিল। পরে ১৯৯৩-তে ১৫ টাকা হয়। ১৯৯৮ থেকে বেড়ে তা হয় ৫০০ টাকা। তারপর প্রধানদের হয়েছিল ১৫০০ টাকা।

গৌতম মজুমদার প্রধান থাকাকালীন দু'দুটো জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে দুর্গাপুর পঞ্চায়েত। ২০১০ সালে টিউবার কিউলিসিস রোগী বাড়তে না দেওয়ার জন্য চেন্নাই থেকে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের কাছ থেকে পুরস্কার নিয়েছেন দুর্গাপুর পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান গৌতম মজুমদার। প্রথম পুরস্কারের অর্থমূল্য ছিল ১৫ লক্ষ টাকা। ২০১৩-তে অ্যাকাউন্টেবেলিটির জন্য গৌতমবাবু রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে জাতীয় পুরস্কার নিয়ে এসেছেন দিল্লি থেকে। তার পুরস্কার মূল্য ৪২ লক্ষ টাকা।

২০১৩-এর পর দুটো টার্ম নির্বাচনে দাঁড়াননি গৌতম মজুমদার। এবার মেমারি এক পঞ্চায়েত সমিতির ২৯ নম্বর আসনে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। গৌতমবাবু বলেন, 'ফের পার্টির নির্দেশে দাঁড়াতে হল। বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। টোটো নিয়ে এলাকায় ঘুরেছি। মীনাক্ষী বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে প্রচারে এসেছিল। লোক ভালই হয়েছিল।' তাঁর দাবি, 'সব বুথেই এজেন্ট দিতে পারব। এখানে তৃণমূল, বিজেপি ছাড়া একজন নির্দল প্রার্থী রয়েছে। আমার আসনে আমি জিতবই। তবে গণনা নিয়ে সমস্যা আছে।'  

panchayat election 2023 Cpm Purba Bardhaman
Advertisment