শোলা শিল্পের কাজ ভালো করে শিখিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রতি দিয়ে শিক্ষনবিশ এক গৃহ বধূকে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শোলা শিল্পী। ধৃতের নাম আশিস মালাকার। শোলা গ্রাম নামে খ্যাত পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার মঙ্গলকোটের বনকাপাশি গ্রামে তাঁর বাড়ি। তিনি রাষ্ট্রপতি কাছ থেকে ‘শিল্পগুরু’ উপাধিও পেয়েছেন। এহেন শিল্পী আশিস মালাকারের এমন কুকীর্তির কথা প্রকাশ্যে আসতেই স্তম্ভিত কাটোয়ার শিল্পী মহল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শোলা শিল্পের কাজে অসামান্য কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরুপ বনকাপাশি নিবাসী আশিস মালাকার কয়েকবছর আগে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পান। তার পর ২০১৯ সালে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারী হস্ত শিল্প প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের মহিলাদের হাতে কলমে শোলার কাজ শিখিয়ে তাঁদের স্বনির্ভর করার দায়িত্ব পান। আশিসের কাছেই বেশ কিছুদিন যাবৎ শোলা শিল্পের কাজ শিখতে যাচ্ছিলেন একই এলাকার বছর ৩৪ বয়সী গৃহবধূ।
ওই মহিলা পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, ভালো করে শোলা শিল্পের কাজ শিখিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বছর ৫৪ বয়সী আশিস মালাকার বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে নিয়ে যেত শুরু করেন। সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন আশিস মালাকার। বিগত তিন বছর যাবৎ এভাবেই আশিস মালাকার একাধিকবার তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলে গৃহবধূর অভিযোগ। বধূ পুলিশকে আরও জানিয়েছেন যে,আশিস মালাকারের কুকীর্তির কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি একাধিকবার চেষ্টা করেছিলে। কিন্তু আশিস মালাকার আপত্তিকর মুহুর্তের ছবি তুলে রেখে তাঁকে ব্ল্যাকমেল করতো। এমনকি ঘটনার কথা কাউকে জানালে তাঁকে প্রাণে মেরে দেবে বলেও হুমকিও দিত। বিষয়টি আর মেনে নিতে না পেরে গৃহবধূ তাঁর স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে আশিস মালাকারের কুকীর্তির কথা জানান। পরে ওইদিনই তিনি মঙ্গলকোট থানায় আশিষ মালাকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে কঠোর সাজার দাবি করেন।
গৃহবধূর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ আইপিসি ৩৭৬, ৪১৭ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা রূজু করে। ওইদিনই আশিস মালাকারকে গ্রেফতার করে।
সোমবার ধৃতকে পেশ করা হয় কাটোয়া মহকুমা আদালতে। গোপন জবানবন্দি পেশের জন্য এদিনই নির্যাতিতাকে আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক ধৃতকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃত ব্যক্তি যদিও আদালত চত্ত্বরে দাবি করেছেন যে, তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।