Advertisment

এক যাত্রায় পৃথক ফল! মানিক-অনুব্রতদের কেন ছাড় তৃণমূলের?

কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। তারপরই উঠছে প্রশ্ন...

author-image
Joyprakash Das
New Update
ed chargesheet anubrata mondal cow smuggling case , কেষ্টর খাসতালুক থেকে কীভাবে বাংলাদেশে গরু পাচার? ইডি-র চার্জশিটে রহস্য ফাঁস!

অনুব্রত মণ্ডল

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা দলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের সাত দিনের মধ্যে দল বহিষ্কার করে। এদিন শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতিতে গ্রেফতার রাজ্য যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করে তৃণমূল। স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ও বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দল কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না কেন?

Advertisment

গত বছর ২৩ জুলাই শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ও তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকে একের পর গ্রেফতারি পর্ব চলছে। ওই বছরই ১১ অগাস্ট গরুপাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। তাঁর আগে সিবিআই তাঁকে বহুবার তলব করলেও তিনি দেখা করেননি। এখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ১১ অক্টোবর গ্রেফতার হন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি তথা পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন দুই যুব নেতা কুন্তল ঘোষ ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়।

শান্তনুকে তৃণমূল বহিস্কার করলেও এখন কোনও দলীয় পদে এই মুহূর্তে সে নেই। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, এখন শান্তনু শুধু হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ। রাজনৈতিক মহলের মতে, একেই শান্তনু এখন ইডির হাতে বন্দি। দল বহিষ্কর করে দায় এড়াল। কারণ তাঁকে নির্দেশ দিলেও সে এখন পদ ছাড়বে কিনা সে ব্যাপারে অনিশ্চয়তা থেকে যায়। আর শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কুন্তলকে দল ঝেড়ে ফেলতে পারলে তৃণমূলেরই মঙ্গল, তাই এই পথেই গিয়েছে দল। অন্যদিকে পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও মানিক ভট্টাচার্য এখনও বিধায়ক রয়েছেন। শান্তনু দলীয় পদে না থাকলেও তৃণমূল দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করেছে। এদিকে মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে তেমন কোনও পদক্ষেপ দল গ্রহণ করেনি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য ও শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়রা তৃণমূলের প্রতীকেই জয়ী হয়েছিল।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্য বিধায়ক পদে ইস্তফা দিলেই ওই দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বেহালা পশ্চিম ও পলাশীপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হলেই ভোটে বিরোধীরা চেপে ধরবে। যে ইস্যুর কারণে উপনির্বাচন হবে সেক্ষেত্রে প্রচারেও সমস্য়ায় পড়তে বাধ্য তৃণমূল। সম্প্রতি গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে আসন হারাতে হয়েছে তৃণমূলকে। উপনির্বাচনে তৃণমূল যখন একের পর এক বিজেপির কেন্দ্রে বিপুল জয় পাচ্ছে সেক্ষেত্রে সাগরদিঘিতে উলট-পূরাণ ঘটেছে। উপনির্বাচনেও যে তৃণমূল ব্যাপক ভোটে হারতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে সাগরদিঘি। এই পরিস্থিতিতে এখন তো কোনও ভাবে বেহালা পশ্চিম ও পলাশীপাড়া কেন্দ্রে উপনির্বাচন হোক তা চাইবে না ঘাসফুল শিবির, অভিমত রাজনৈতিক মহলের।

আরও পড়ুন- মামলায় মামলায় জর্জরিত রাজ্য, হাল ধরতে এবার কী তাহলে এজলাসে স্বয়ং মমতা?

অন্যদিকে অনুব্রত মন্ডল এখনও বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি রয়েছেন। বীরভূমে তৃণমূলের অন্দর থেকেই কথা উঠেছিল আসানসোল জেল থেকে মোবাইলে দল পরিচালনা করছেন অনুব্রত। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও মোবাইল ব্যবহার করার অভিযোগ করেছিলেন অনুব্রতর বিরুদ্ধে। এমনকী যেদিন দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য আসানসোল থেকে কলকাতা নিয়ে আসা হচ্ছিল অনুব্রত মন্ডলকে সেদিন শক্তিগড়ের ল্য়াংচার দোকানে তিন জনের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু এখন তিনি ইডির হেফাজতে দিল্লিতে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার দেখার বিষয় আর কতদিন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি থাকতে পারেন মমতার কেষ্ট। মামলার শেষ অবধি দল অপেক্ষা করবে নাকি তার আগে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে, সেই দিকেই নজর রাজনৈতিক মহল।

anubrata mondal Manik Bhattacharya
Advertisment