লেখক এবং সমালোচক সিভিক চন্দ্রনের আগাম জামিন মঞ্জুর করল কেরলের কোঝিকোড় জেলা দায়রা আদালত। জামিন মঞ্জুরের কারণ হিসেবে আদালতের পর্যবেক্ষণ, তপশিলি জাতি এবং উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের অধীনে চন্দ্রনের বিরুদ্ধে অভিযোগ খাটছে না। আদালত মনে করছে, নির্যাতিতা তপশিলি জাতিভুক্ত জেনেও তাঁর শরীর চন্দ্রন স্পর্শ করবে, এটা অবিশ্বাস্য। চন্দ্রনের বিরুদ্ধে এক দলিত লেখকের দায়ের করা যৌন হয়রানির মামলায় পর্যবেক্ষণ একথাই জানিয়েছেন বিচারক।
আদালত জানিয়েছে, 'তপশিলি জাতি এবং উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের অধীনে অপরাধের অভিযোগ প্রমাণ করতে গেলে, এটা আগে প্রমাণ করা দরকার যে অভিযুক্ত জানতেন যে তিনি যার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন, সেই ব্যক্তি তপশিলি জাতি বা উপজাতিভুক্ত।' চলতি বছর চন্দ্রনের বিরুদ্ধে দুটি যৌন হয়রানির মামলা দায়ের করা হয়েছিল। দুটিতেই তাঁকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে। প্রথম মামলায় ১৭ জুলাই একজন দলিত লেখক পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে চন্দ্রন তাঁর ঘাড়ে চুম্বন করার চেষ্টা করেছিলেন। আর ১৭ এপ্রিল শালীনতা ভঙ্গের চেষ্টা করেছিলেন। কোঝিকোড়ের জেলা আদালত এই মামলায় ২ আগস্ট চন্দ্রনকে আগাম জামিন দেয়।
দ্বিতীয় মামলায় ১২ আগস্ট আদালত চন্দ্রনকে আগাম জামিন দেয়। এই ক্ষেত্রে আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল যে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ (এ) (যৌন হয়রানি) ধারার অধীনে অপরাধটি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হবে না। কারণ, অভিযোগকারিণী 'যৌন উত্তেজক' পোশাক পরেছিলেন। আগাম জামিনের নির্দেশে, দায়রা বিচারক কে কৃষ্ণকুমার বলেন যে, 'প্রাপ্ত তথ্যগুলো একে অভিযুক্তের মর্যাদাকে সমাজে কলঙ্কিত করার চেষ্টা' হিসেবেই দেখাচ্ছে।
আরও পড়ুন- দেশ বিরোধী প্রচার, কোন বিধিতে কড়া পদক্ষেপ কেন্দ্রের?
বিচারক বলেন, 'তিনি জাতিভেদ প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। এই সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি আন্দোলনে জড়িত। প্রথম বিবৃতিতে একথা মোটেও বলা হয়নি যে অভিযোগকারিণী তপশিলি জাতিভুক্ত জেনে অভিযুক্ত কাজটি করেছে। অভিযুক্তের SSLC বইয়ের কপি থেকে দেখা যায় যে তিনি এতে বর্ণের নাম উল্লেখ করতে পর্যন্ত অস্বীকার করেছেন। অভিযুক্ত একজন সংস্কারপন্থী এবং এক বর্ণহীন সমাজের জন্য লিখছেন। বর্ণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তিনি লড়াইয়ে নিযুক্ত। আর, তাই তপশিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের বিভিন্ন ধারার অধীনে তাঁর অপরাধগুলো প্রমাণিত হবে না।'
Read full story in English