করোনা আবহেও দুই মন্ত্রকের সমন্বয়ের অভাব প্রকট হচ্ছে। আইসিএমআরের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে বৃহস্পতিবারই বিদেশমন্ত্রকের সচিব পর্যায়ের আধিকারিক জানিয়েছিলেন যে, লকডাউন জারি না হলে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখের বেশি হতে পারত। পরে, বিদেশমন্ত্রকের আধিকারিকের সেই দাবি নস্যাৎ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লভ আগারওয়াল। আইসিএমআর প্রকাশিত এমন কোনও রিপোর্ট নেই বলেও জানান তিনি।
Advertisment
গত বৃহস্পতিবারই বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলিকে ভারতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে জানাচ্ছিলেন মন্ত্রকের সচিব (পশ্চিম) বিকাশ স্বরূপ। তিনি বলেন, 'লকডাউনের ফলে ভাইরাসের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। বৈজ্ঞানিকদের অনুমান, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখতে পারলে প্রতিদিন ভাইরাসের প্রজনন ক্ষমতা আড়াই জনের শরীরে ছড়াতো। কিন্তু, লকডাউনের ফলে তার হার ৭৫ শতাংশ আটকানো গিয়েছে। এর ফলে প্রতিদিন ০.৬২৫ জনের শরীরে সংক্রমণ বিস্তার করছে।'
বিষয়টি স্পষ্ট করতে গিয়ে স্বরূপ বলেন, 'লকডাউন না হলে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে ৮ লাখ ২০ হাজার মানুষ করোনা সংক্রমিত হতেন। বর্তমানে সেই হার ৬ হাজারের মতো (গত বৃহস্পতিবারের তথ্য অনুসারে)। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে দেশের ৭৮টি জেলায়।' তাঁর এই তথ্য আইসিএমআর প্রকাশিত রিপোর্টের বলে জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রকের সচিব (পশ্চিম) বিকাশ স্বরূপ।
Advertisment
তবে, স্বাস্থ্যমন্ত্রকে যুগ্ম সচিব লভ আগারওয়াল জানিয়ে দেন, 'এই ধরনের কোনও রিপোর্ট নেই।' তাঁর কথায়, ''করোনা মোকাবিলায় আমাদের সবাইকে একরকযোগে কঠিন পদক্ষেপ করতে হচ্ছে। ভুল হলেই সংক্রমণের মাত্রা ক্রমশ বেড়ে যাবে। দ্য ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের তরফে আইসিএমআরের রিপোর্টের ভিত্তিতে বিদেশমন্ত্রকের সচিবের দাবি নিয়ে লভ আগারওয়ালকে পের প্রশ্ন করা হলে তিনি আর কোনও উত্তর দেননি।
স্বাস্থ্য বা বিদেশ মন্ত্রকে কর্মরত নন এমন এক কেন্দ্রী সরকারি আধিকারিকের কথায়, অধ্যয়নটি অন্যান্য ভৌগলিক এলাকার উপর করা তথ্যের ভিত্তিতে সমৃদ্ধ। উচ্চ পর্যায়ের সরকারি সূত্রে জানা গিয়েেছে, গত সপ্তাহেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের এক আলোচনায় এই বিষয়ে পর্য়ালোচনা হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় বারত কী পদক্ষেপ করেছে বিদেশমন্ত্রকের তরফে তা বিদেশি সংবাদ মাধ্যমকে জানানো হয়। স্বরূপ জানান, ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মেলে ৩০ জানুয়ারি। যার ১৩ দিন আগে, আর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি থেকেই দেশে থার্মাল স্ক্রিনিং চালু হয়েছিল। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি হয় ১১ই মার্চ থেকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও ভারতের করোনা মোকাবিলার পদক্ষেপগুলির প্রশংসা করেছে বলে দাবি করেন বিদেশমন্ত্রকের তরফে।