“আমি তোমার চোখের কালো চাই
তাই তোমার দিকে তাকাই”, এক সময় বাংলার লভ অ্যান্থেম হয়ে ওঠা এই গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছেন? কিন্তু আহা! ভুল করছেন। গায়ক এখানে চোখের কালো চেয়েছিলেন, চোখের তলার কালি চাননি একেবারেই। আপনিও চাইবেন না নিশ্চয়ই। অথচ আধুনিক জীবনের উপহার হিসেবে একে অস্বীকার করাও মুশকিল খুব।
চোখের তলায় সাধারণত নীলচে এবং বাদামি দুই ধরনের দাগ পড়তে পারে। বাদামি দাগ সাধারণত তৈরি হয় জিনগত কারণেই। তবে চোখ বেশি কচলালে বা রোদে পুড়েও হতে পারে এমন অবস্থা। এ অস্বস্তি এড়াতে এমন ক্রিম ব্যবহার করুন যাতে সয়া বা সাইট্রাস আছে। এগুলো ত্বক উজ্জ্বল হতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন, কোন চুলের জন্য কোন শ্যাম্পু?
বেশিরভাগ সময়ই আমরা আমাদের চোখের নিচের কালি ঢাকার জন্য ফাউণ্ডেশন কিনে নিয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে থাকি , কিন্তু কখনোও কি আমরা আমাদের চোখের নিচের কালি কেন জমে তার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করে থাকি ? আমাদের চোখ এর নিচে যে ত্বক অনেক বেশি স্পর্শকাতর এবং এর নিচে অনেক ছোট ছোট রক্তনালী বয়ে গেছে যারা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে এবং চোখের নিচের ত্বক কালো হতে থাকে। চোখের নিচের অংশে ফ্লুইড জমা হতে থাকার কারণে চোখের নিচটা ফুলে যেতে থাকে এবং চোখের নিচে কালি পড়ে। এর পিছনে অনেকগুলো কারণ আছে।
মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা
চোখ এর নিচে কালি পড়ার জন্য খুব প্রচলিত একটি কারণ সেটি হলো কোন কারণে খুব বেশি চাপে থাকা বা কোন ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা।
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
কেউ যদি দিনে কমপক্ষে আট ঘণ্টা না ঘুমাতে পারে , তবে তার চোখ এর নিচে কালি পড়ার সম্ভাবনা থাকে।৮ ঘন্টা সম্ভব না হলে অন্ত ছয় ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
আরও পড়ুন, লিপস্টিক কী ভাবে লাগালে দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়?
চোখ শুকিয়ে যাওয়া
শরীর থেকে অনেক বেশি মাত্রায় জল বেরিয়ে গেলে ত্বক শুষ্ক এবং শরীর দূর্বল হয়ে যায়। এর ফলে চোখের নিচে কালি পড়ে। শরীর থেকে তাই ঘামের মাধ্যমেও অনেকটা জল বেরিয়ে জায়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করতে হবে।
আসুন দেখে কিভাবে আমরা ঘরে বসেই প্রাকৃতিক উপায়ে চোখের নিচের কালি দূর করতে পারি ।
চামচ থেরাপি
বাসার রেফ্রিজারেটরে ২টি চা চামচ রেখে ঠান্ডা করুন । চামচ যখন ঠাণ্ডা হয়ে যাবে ,তখন বিছানায় শুয়ে চোখের উপর চামচ দুইটি রাখুন যতক্ষণ না এটি সাধারন তাপমাত্রায় আসে ।এটি একই সাথে চোখের ক্লান্তি ও চোখের নিচের কালি দূর করে থাকে।
শসা
সতেজ শসা স্লাইস করে কেটে আধ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করুন। দশ মিনিট চোখের উপর রেখে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে অন্তত দুবার, একটানা সাত দিন। আবার শসা আর লেবুর রস সমান পরিমাণ মিশিয়ে মাখতে পারেন ত্বকে। দিনে একবার করে সাত দিন মাখুন। স্বাভাবিক রং ফিরে আসবে।
আরও পড়ুন, পায়ের যত্ন নেবেন কী ভাবে?
কাঁচা আলু
কাঁচা আলু ঠাণ্ডা করে ব্লেন্ডারে পিষে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট দাগের উপর মেখে ১০-১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আলু পেস্ট করতে ঝামেলা মনে হলে শসার মত স্লাইস করেও ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহ জুড়ে দিনে ১-২ বার ব্যবহার করলেই চলবে।
গোলাপ জল
প্রাকৃতিক ভাবেই গোলাপ জল স্কিন টোনার হিসেবে কাজ করে। ছোট্ট পরিস্কার কাপড়ের টুকরা বা আই প্যাড গোলাপ জলে ভিজিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট। পুরো ভিজলে চোখ বন্ধ করে চোখের পাতার উপর রেখে দিন ১০-১৫ মিনিট। দিনে একবার করে ৭-১০ দিন ব্যবহার করলে চোখের স্বাভাবিক রং ফেরত আসবে।
আরও পড়ুন, বয়স কমাতে মুখের কী কী ব্যায়াম করবেন?
টমেটো
টমেটো চোখের নীচের কালো দাগ দূর করতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর সাথে সাথে আপনার ত্বককে করবে কোমল লাবন্যময়। ১ চা চামচ টমেটোর রস, ১ চাচামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এটি চোখের নিচে লাগান। ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি দিনে ২ বার করা চেষ্টা করুন। টমেটোর রস , লেবুর রস আর সাথে পুদিনা পাতা যোগ করে তৈরি করে নিতে পারেন দারুন একটি হেলথ ড্রিংক। এটি আপনার চোখের নীচের কালি ভিতর থেকে দূর করতে সাহায্য করবে।
ঠাণ্ডা চায়ের ব্যাগ
চায়ের ব্যাগ দিয়ে ও চোখের নিচে কালি দূর করা সম্ভব। সবুজ বা কালো চায়ের ব্যাগ ঠান্ডা করে নিন। আপনার চোখের ওপর ঠান্ডা চায়ের ব্যাগটি রাখুন। ১০/ ১৫ মিনিট পর চায়ের ব্যাগ সরিয়ে ফেলুন। দিনে ২/৩ বার করার চেষ্টা করুন।
আরও পড়ুন, গর্ভাবস্থায় এই ওষুধ খেলে সন্তানের ওবেসিটির ঝুঁকি বেড়ে যায়
ঠান্ডা দুধ
প্রতিদিন ঠাণ্ডা দুধ ব্যবহারে আপানার চোখের নীচের কালো দাগ দূর করে থাকে। তুলার বল ঠাণ্ডা দুধে ভিজিয়ে নিন। ভেজা তুলার বল আপানার চোখে ওপর রাখুন। ১০/১৫ মিনিট পর তুলা সরিয়ে নিন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি প্রতিদিন করাতে আপানার চোখের নীচের কালির দাগ করবে।