/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/08/Exercise.jpg)
প্রতীকী ছবি
সারাদিনের বেশিরভাগ সময় নিজেদের কাজেই ব্যয় করেন সকল মানুষ। তার সঙ্গে মানসিক চাপ এবং অতিমারির করাল গ্রাসে এক জায়গায় ঠায় বসে থাকার প্রভাব খুবই সংকটজনক। প্রত্যেক মানুষকে সারাদিনে প্রয়োজনমতো শরীর চালনা করা খুবই দরকার। এই সময় দাঁড়িয়ে মাঠে ঘাটে খেলাধুলার অভ্যাস এখন আর কারওর নেই বললেই চলে। সুস্থ দেহ কিন্তু মানসিক এবং শারীরিক উভয়কে ভাল রাখতে সক্ষম। যে কোনও ধরনের খেলাধুলার প্রভাব কিন্তু মানুষের আয়ু বাড়াতে পারে।
আজ জাতীয় ক্রীড়া দিবস। প্রতিবছর হকি কিংবদন্তী মেজর ধ্যান চাঁদের জন্মদিন স্মরণে এই দিন পালিত হয়। প্রতিদিনের শরীরচর্চা এবং খেলাধুলা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। কী বলছেন চিকিৎসকরা? মুলুন্দের ফর্টিস হাসপাতালের সিনিয়র জেনারেল ফিজিশিয়ান ডা. মনজিৎ সিং অরোরার বক্তব্য, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ শিশু থেকে কিশোর-কিশোরী এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদের কার্ডিও-রেসপিরেটরি ফিটনেস উন্নত করতে, হাড় ও পেশী শক্তিশালী করতে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে, উদ্বেগ ও বিষণ্নতার লক্ষণ কমাতে এবং ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
খেলাধুলা এবং শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সুবিধা:
• যেকোনও খেলায় প্রয়োজন শক্তি, সময় এবং ধৈর্য তার সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন বুদ্ধিমত্তা। অনেকেই মনে করেন খেলার অর্থ সময়োপচয়। কিন্তু তা একেবারেই না। বরং পড়াশোনায় মন বসতে সাহায্য করে খেলাধুলা। শেখার দক্ষতা, অনুশীলন এবং ধৈর্য সরাসরি পুঁথিগত বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
• খেলাধুলা টিমওয়ার্ক শেখায়। যেকোনও কাজ করতে গেলে একটি সুনিপুণ দলের খুবই প্রয়োজন এবং অনেক ক্ষেত্রে ট্র্যাকে একা দৌড়ালেই চলেনা, সবাইকে প্রয়োজন হয়। তাই একসঙ্গে কী করে সমস্যার সমাধান করা যায় তা কিন্তু স্পোর্টস থেকেই শেখা যায়।
• খেলাধুলা একপ্রকার শরীর চর্চা। এটি আপনাকে ফিটনেস লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। সঙ্গে স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে এবং স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্ত যেমন ধূমপান ও মদ্যপান না করা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এসব বিষয়ে নজড় দেয়।
• খেলাধুলা অবশ্যই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে। এতে হার জিত লেগেই আছে। প্রতিদিন সমান নয়। আপনার পরিশ্রমের ফল এবং কঠোর উদ্দেশ্য জীবনে এনে দেবে লাভ সঙ্গে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।
• মানসিক চাপ কম করতেও এটি কার্যকরী। মানসিক স্থিতি শিথিল করে এবং তার থেকে মুক্তি দেয়। প্রাকৃতিক উপায় গুলোর মধ্যে এটিই শিরোধার্য।
যে ধরনের শারীরিক সমস্যাগুলি থেকে নিয়মিত শরীরচর্চা এবং খেলাধুলা মুক্তি দেয়
* উন্নত কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য
* হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
* ওজন ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখে
* রক্তচাপ কমে
* উন্নত এ্যারোবিক ফিটনেসের বৃদ্ধি করে
* পেশী শক্তি এবং ধৈর্য উন্নত হয়
* মানসিক চাপ থেকে মুক্তি
* নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কম
* কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
* অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি কমে
* শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম
* পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয়
* মানসিক স্বাস্থ্যের সুবিধা ঘটে
* দীর্ঘায়িত জীবন লাভ হয়
সবরকম শরীরচর্চা এবং খেলাধুলার মধ্যে নির্দিষ্ট সময় হাঁটা, জিমে যাওয়া, জগিং কিংবা অ্যাথলেটিক্স, সাঁতার, সাইক্লিং, বাস্কেটবল কিংবা টেনিস, ফুটবল এগুলি সবথেকে ভালও। যদিও বা অতিমারিতে উপরোক্ত সবগুলি করা সম্ভব নয় তারপরেও বেশ কিছু এখনও আয়ত্তের মধ্যে।
এতসব তো হল। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় শারীরিক পুষ্টি এবং অন্যান্য পর্যাপ্ততা না থাকলে কিন্তু বেশ সমস্যা।
আরও পড়ুন UN Food System Summit 2021: স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট কাকে বলে? জানুন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
কী ধরনের খাবার খাবেন?
ফল, ওটমিল, মিষ্টি আলু/ সাদা আলু, ব্রকলি, শাক, রুটি কিংবা ক্রাকার্স, উচ্চ ফাইবার এবং শর্করা বিহীন ডালশস্য।
আর কী কী খাবেন না?
স্পোর্টস ড্রিংক, সোডা, প্রোটিন এবং এনার্জি বার, কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যাফেইন, অবশ্যই অ্যালকোহল।
তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজনীয় খাবার খান, ব্রেকফাস্ট স্কিপ করবেন না। অন্তত ৩-৪ ঘণ্টা পরপর খান। খেলাধুলা এর শরীরচর্চার মাধ্যমে নিজেকে ফিট রাখুন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন