Advertisment

পদত্যাগ করেই তৃণমূলকে আক্রমণ সব্যসাচীর

তৃণমূলকে বিঁধে সব্যসাচী দত্তের মন্তব্য, ‘‘শাসনের নামে শোষণ হচ্ছে। তৃণমূলে যে এই শোষণ হবে, তা কখনও ভাবিনি’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
sabyasachi dutta, mamata banerjee, সব্যসাচী দত্ত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সব্যসাচী দত্ত ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ইস্তফা দেওয়ার পরই দলের বিরুদ্ধে ফের সুর চড়ালেন সব্যসাচী দত্ত। বিধাননগরের মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরই সল্টলেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে সটান চলে যান তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী। শিক্ষকদের অনশনমঞ্চে দাঁড়িয়েই মমতা বাহিনীর উপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতিতে বহুলচর্চিত সব্যসাচী। আসন্ন তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের মেগা সমাবেশকে কটাক্ষ করে সব্যসাচী বললেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের কাছে জলটুকু নেই, বাথরুম নেই, আর উল্টোদিকে ২১ জুলাইয়ের এলাহি আয়োজন’’। শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে গিয়ে নাম না করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়েকও এদিন নিশানা করলেন রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক। সব্যসাচীর কটাক্ষ, ‘‘শিক্ষকরা রাস্তায় আর মন্ত্রী-সেক্রেটারিরা ঠান্ডা ঘরে বসে রয়েছেন। অনশনমঞ্চ থেকে বিকাশ ভবন তো কাছেই’’।

Advertisment

আরও পড়ুন: ইস্তফা দিলেন সব্যসাচী দত্ত

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে সল্টলেকের বিদ্যুৎ ভবনে কর্মচারি সংগঠনের বিক্ষোভ মঞ্চে সব্যসাচীর উপস্থিতির পর থেকেই তৃণমূল-সব্যসাচী সংঘাত চরম আকার নেয়। ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হন সব্যসাচী। এরপরই সব্যসাচীকে ‘চরম শিক্ষা’ দিতে আসরে নামে তৃণমূল। এদিন শিক্ষকদের অনশনমঞ্চে গিয়ে দলের বিরুদ্ধে সেই ‘বিদ্রোহী’ মনোভাবই অটুট রেখে তৃণমূল নেতৃত্বকে সব্যসাচী বার্তা দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এদিনও সব্যসাচীর গলায় শোনা গেল, ‘‘শ্রমিকদের পাশে আছি, থাকব’’। পাশাপাশি তৃণমূলকে বিঁধে সব্যসাচীর মন্তব্য, ‘‘শাসনের নামে শোষণ হচ্ছে। তৃণমূলে যে এই শোষণ হবে, তা কখনও ভাবিনি’’।

আরও পড়ুন: সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হিম্মত নেই মমতার: মুকুল

অন্যদিকে, সল্টলেকে বিদ্যুৎ ভবনে কর্মচারি সংগঠনের বিক্ষোভ মঞ্চে বিদ্যুৎমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এদিন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বকে একহাত নিলেন সব্যসাচী। এ প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘মানুষের স্বার্থে মানুষের পাশে কথা বলতে ৫ জুলাই বিদ্যুৎ ভবনে দাবিদাওয়া পেশ করায় বিদ্যুৎমন্ত্রীর রোষে পড়লাম। শুনলাম উনি কাঁদতে কাঁদতে বলে ফেললেন দলনেত্রীকে, আমাকে এরকম ভাবে বলছে, ওকে রাখা যাবে না। তারপর থেকে রোজ চেষ্টা হতে থাকল, কীভাবে মেয়রকে অপসারণ করা যায়’’।

প্রসঙ্গত, মুকুল রায়ের সঙ্গে লুচি-আলুর দম খাওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে সব্যসাচীর সম্পর্কের ফাটল শুরু হয়। এরপর প্রায়শই দলের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে সব্যসাচীকে। কখনও তিনি দলের বিধায়ক সুজিত বসুর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, কখনও বা সব্যসাচীর গলায় শোনা গিয়েছে ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগান। এমনকী, এনআরএসকাণ্ডে দলনেত্রীর ভূমিকারই সমালোচনা করেছিলেন সব্যসাচী। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সব্যসাচীকে ‘মীরজাফর-বেইমান’ বলে কটাক্ষ করেন ফিরহাদ হাকিম। সব্যসাচীকে দল ছাড়ার বার্তাও দেন ফিরহাদ। সম্প্রতি সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল। বিধাননগর পুরনিগমে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অনাস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান সব্যসাচী। হাইকোর্টের রায় সব্যসাচীর পক্ষে হলেও শেষমেশ বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন সব্যসাচী। যদিও এখনও দলের কাউন্সিলর ও বিধায়ক পদে রয়েছেন সব্যসাচী। এদিন যে ভাষায় ফের দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন সব্যসাচী, তাতে তাঁর তৃণমূল বিচ্ছেদের সম্ভাবনা আরও জোরালো হল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের।

tmc
Advertisment