ভারতের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবান খেলোয়াড় তাঁরা, কিন্তু লকডাউনে জীবনের সব হিসেব বদলে গিয়েছে। বদলে গিয়েছে ভবিষ্যতের আশা-ভরসা। দেশের হয়ে সোনাজয়ী, রূপোজয়ীরা আজ পেটের জ্বালায় কেউ ফলবিক্রেতা, কেউ আবার রিক্সা চালিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
কিন্তু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন না কেউই। এই সকল অ্যাথলেটিক্সরা উঠে এসেছেন দরিদ্র পরিবার থেকে। লকডাউন জীবনে কাজ হারানোর পরিবারের পাশে তাই দাঁড়াতে হচ্ছে দেশের হয়ে খেলা আলি আনসারি, মিরাজ, লোকেশের মতো তুর্কিদের। অর্থনৈতিক ঝাপটায় ঘরে নেই খাওয়ার, দুধ-ঘি-ফল সেখানে বিলাসিতা। অতএব বন্ধ হয়েছে ট্রেনিংও। দিল্লির এক ট্রেনার পুরুষোত্তম বলেন, "উপস্থিতি মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আমাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিতেন এমন অনেক ছেলেমেয়েরা আছেন যারা গ্রামে থাকেন। গাড়ি নেই, বাসের ভাড়া দিতে অপারক তাই ট্রেনিংয়েও আসতে পারছেন না। তাই খেলাটাই ছেড়ে দিচ্ছেন।"
পুরুষোত্তমের কাছেই ট্রেনিং নিতেন ১৯ বছরের মিরাজ আলি। ২০১৭ সালে এশিয়ান ইয়ুথ মিট-এ ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দিল্লির ত্রিলোকপুরির এক কামরার একটি ঘরে ভাড়া থাকেন মিরাজ। পরিবারে রয়েছেন দুই বোন, এক দাদা, মা-বাবা। মিরাজ বলেন, "গত ডিসেম্বরে বাবার কিডনির অপারেশন রয়েছে। বাবার বিশ্রামের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কাজ করতেই হচ্ছে। আমরা ঘরে চা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। দুধ চা খাওয়া বিলাসিতা এখন। আমাকেও বাবার পাশে দাঁড়াতে হবে। আমার খেলোয়াড় জীবনের সব স্বপ্ন শেষ।"
শুধু মিরাজ নয়, দক্ষিণের থাবিতা ফিলিপ্স মাহেস্বরণের জীবনের কাহিনীও অনেকটাই এক। দু'বার এশিয়ান ইয়ুথ অ্যাথলেটিক্স-এ সোনা জেতা এই দক্ষিণী কন্যা অর্থনীতির জাঁতাকলেই নিজের শখ, ভালোবাসা এবং মেডেলকে তুলে রেখেছেন শো-কেসে। থাবিতা বলেন, "আমি লং-জাম্পার ছিলাম। লকডাউনে পরিস্থিতি বাধ্য করল খেলা ছাড়তে। আমাকে একটি এনজিও সাহায্য করত। কিন্তু অর্থাভাব থাকায় ওঁরাও টাকা দেওয়া কমিয়ে দিল হঠাৎ। আমার বাবা রিক্সা চালিয়ে রোজগার করে। লকডাউনে সেটাও বন্ধ হয়েছে। তিনজনের এক বেলা খাবার জোটানো এখন আমাদের কাছে একটা লড়াই।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন