পাকাপাকিভাবে না হলেও সাময়িক স্বস্তি ধৃত অল্ট নিউজ প্রতিষ্ঠা মহম্মদ জুবেরের। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট সাংবাদিকের পাঁচ দিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে। ২০১৮ সালে শেয়ার করা একটি "আপত্তিকর" টুইটের জন্য দিল্লি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। তবে জামিন পেলেও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কোথাও যেতে পারবেন না জুবের। দিল্লির ম্যাজিস্ট্রেটের এক্তিয়ারের মধ্যে থাকা এলাকাতেই তাঁকে থাকতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কোনও টুইট পোস্টও জুবের করতে পারবেন না।
উত্তর প্রদেশের কয়েকজন হিন্দু নেতা সাংবাদিক জুবেরের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ এনে মামলা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় শীর্ষ আদালতে জামিনের আবেদন করেন মহম্মদ জুবের। বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জে কে মহেশ্বরীর বেঞ্চের সামনে তাঁর আইনজীবী জানান, প্রতিনিয়ত প্রাণনাশের হুমকি পাচ্ছেন জুবের।
অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা জুবেরের আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট কলিন গনসালভেস। জুবেরের বিরুদ্ধে কেন কোনও ফৌজদারি মামলা করা যাবে না, নিজের যুক্তি-সহ তা আদালতকে জানান গনসালভেস। সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের খবর অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টকে জুবেরের আইনজীবী বলেছেন, ''এই মামলার ভিত্তি হল একটি টুইট। আমরা কার্যধারা বাতিল চাই। পুলিশ বা বিচার বিভাগীয় হেফাজতের প্রশ্ন এখন অপ্রাসঙ্গিক। কোনও মামলা হয়নি। কার্যধারা বাতিল করা দরকার।''
তাঁর আরও সওয়াল, ''এই দেশে কি সময় এল! ঘৃণাত্মক ভাষা প্রকাশের বিষয়টি যিনি প্রকাশ্যে আনলেন তিনিই জেলে। যাঁরা এই ধরনের ভাষার ব্যবহার করেই চলেছেন তাঁরা জামিনে রয়েছেন। সংবিধান, বিচারপতিদের নিয়ে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন। জুবের বিচারপতি, সংবিধানের বিরুদ্ধে এই ধরনের বিষাক্ত ভাষাই প্রকাশ্যে এনছেন। এই কাজের জন্য তিনি এখন জেলে রয়েছেন।''
আরও পড়ুন- কয়েকশো কোটি টাকার ‘দুর্নীতি’, অপসারিত মোদীর স্বপ্নের ‘বুলেট ট্রেন’ প্রকল্পের প্রধান
এদিকে, জুবেরের বিরুদ্ধে "তথ্য গোপন"-এর অভিযোগ এনেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, উত্তর প্রদেশ পুলিশের পক্ষে তিনিই আদালতে সওয়াল করেছেন। তাঁর অভিযোগ, ''সাংবাদিক তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেননি যে গতকাল সীতাপুর আদালতও তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করেছে।'' মেহতার এই প্রশ্নের জবাবে পাল্টা জুবেরের আইনজীবী গনসালভেস সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, ''সীতাপুর পুলিশ সাংবাদিককে হেফাজত চাইছে, পিটিশনে এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।''
আরও পড়ুন- দৈনিক সংক্রমণ আবারও ১৯ হাজার ছুঁইছুঁই, আরও বাড়ল করোনা অ্যাক্টিভ কেস
সলিসিটর তুষার মেহতা আদালতে আরও জানান, শুধুমাত্র টুইটে তোলা প্রশ্ন নিয়েই এই মামলা নয়। সমাজে বিদ্বেষ-হিংসা ছড়ানোর ষড়যন্ত্রেও জুবের জড়িত কিনা তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে টাকার লেনদেনের একটি বিষয় তো রয়েছেই। মেহতার সওয়াল, ''ভারতের প্রতি বিদ্বেষ রয়েছে এমন দেশগুলি থেকে জুবের অনুদান পেয়েছেন কিনা তা তদন্ত করে দেখা একান্ত প্রয়োজনীয়।'' এর আগে দিল্লি হাইকোর্ট জুবেরের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন খারিজ করে দিয়েছিল। তবে এবার সুপ্রিম কোর্ট সাংবাদিকের জামিন মঞ্জুর করেছে।